
চীনা ইউটিউব সেলিব্রেটি লি জিকি। ইউটিউবে লি জিকির জীবন দেখলে মনে হবে, এটা আমাদের এই পৃথিবী নয়, অন্য কোনো রূপকথার দেশ। চীনের সিচুয়ান প্রদেশের এক গ্রামের মেয়ে লি জিকি। নিজের প্রতিদিনের জীবন ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড করেন তিনি। এতেই তার চ্যানেলে প্রায় ৮০ লক্ষ ফলোয়ার। প্রতিটি ভিডিওর ভিউ ২ থেকে ৩ কোটি। কিন্তু কে এই লি জিকি? কেউ জানত না। কিছুদিন আগে একটু একটু করে বের হয়ে আসতে শুরু করেছে এই ইউটিউব সুপারস্টারের পরিচয়।
পরীর মতো আভিজাত্য নিয়ে লি জিকি কৃষকের কাজ করেন। ইউটিউবে প্রতিটি ভিডিওতে কিছু একটা বানিয়ে দেখান লি জিকি। চীনার সিচুয়ান প্রদেশে তার গ্রামের আশেপাশে পাওয়া জিনিস দিয়েই তৈরী করেন অসাধারণ কোনো খাবার বা ফার্নিচার এমনকি জামাকাপড়।
লাল জামা পড়ে ঘোড়ার পিঠে চড়ে যখন তিনি ফুল তোলেন তখন তাকে রূপকথার চরিত্র মনে হয়। নিজ হাতে বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ এনে যখন চীনা ঐতিহ্যবাহী ফার্নিচার বানান লি। তার কাজকর্ম দেখলেই বোঝা যায়, গ্রামীন জীবন, প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে তার যথেষ্ট জ্ঞান আছে। আর তার সিচুয়ান পদ্ধতির রান্না দেখলে জিভে জল আসবেই।
চীনা এই ইউটিউব সেনসেশন সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায় না। সম্প্রতি চীনা একটি পত্রিকা প্রথম বারের মতো তার সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। নব্বই দশকে জন্মেছেন লি জিকি। সিচুয়ানের গ্রামেই বড় হয়েছেন তিনি। ১৪ বছর বয়সে সৎ মায়ের অত্যাচার সইতে না পেরে কাজের খোঁজে শহরে চলে যান। কিন্তু বুড়ো দাদা-দাদির দেখাশোনা করতে ২০১২ সালে আবার গ্রামে চলে আসেন। তাদের সাথেই থাকেন লি জিকি। এক সময় নিজের জীবন ভিডিও করে ইউটিউবে দিতে শুরু করেন। ভিডিওজুড়ে দাদীর জন্য খাবার রাঁধতেই দেখা যায় তাকে। প্রতিটি ভিডিওতে চীনের গ্রামীন জীবন তুলে ধরেন তিনি।
একাই শুরু করেছিলেন সব কিছু। নিজেই ক্যামেরা বসিয়ে নিজের প্রতিটি কাজ ভিডিও করেন। পুরো প্রক্রিয়াটির ভিডিও নিজেই সম্পদনা করে ইউটিউবে দিতে থাকেন। তাতেই চারিদিকে সাড়া পড়ে যায়। তার পরও বেশ কয়েক বছর ধরে সত্যিকার লি জিকির কথা কিছুই জানা যায় নি।
কিছুদিন আগে সাংবাদিকেরা অনেক ঝক্কির পর, দীর্ঘ পথ পেরিয়ে প্রত্যন্ত এক গ্রামে খুঁজে পায় লি জিকিকে। জানা যায় সত্যিকারের লি জিকির জীবনের গল্প। অনেকেই সন্দেহ করেন এক একা এত ভাল মানের ভিডিও করা কিভাবে সম্ভব? তবে লি জিকি শুরুতে একাই শুরু করলেও এখন একজন ক্যামেরাম্যান ও অ্যাসিসটেন্টের সাহায্য নেন। চীনা অনলাইন ভিডিওর বাজার প্রায় ৬৫০ কোটি ডলারের। তার একটা অংশ ইউটিউব সেলেব্রিটি লি জিকির কাছে তো যাচ্ছেই।
