
-মিস বাংলাদেশ জ্বরে কাঁপছে এই দেশ।
-মিসেস হয়ে কেন মিস হওয়ার প্রতারণা?
-মিসেস হইলে সমস্যা কোথায়, যেখানে নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে হয়েছে-
-বিচারকের রায় কে অস্বীকার করে আয়োজকদের রায় প্রতিষ্ঠা করা হল-
-মিস বাংলাদেশের মুকুট ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে
ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি
অবাক আর বিস্ময় নিয়ে ভাবি আর কতকাল মেয়েরাই বলির পাঁঠা হবে- যুগ যুগ ধরে নারীর প্রতি এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আচরণ কি কোনোদিনও বদলাবে না?
এখানে যে মেয়েগুলো অংশগ্রহণ করল তাদের কতটুকু ভূমিকা ছিল পুরো প্রক্রিয়াটির নানা স্তরে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে? তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছার কতটুকু মূল্য ছিল?
একটু লক্ষ্য করেন, কে কার চেয়ে ভাল, যোগ্য সেটা এখানে বিবেচ্য বিষয় কখনই ছিল না, বরং এখানে কাকে এবং কিভাবে ব্যবহার করলে আখেরে ফায়দা হবে তা ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনায় আমাদের ফেইসবুক বন্ধুদেরও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যাদের লাভ হল এই প্রহসনে-
১) অন্তর শো বিজ ১০০% সফল তার প্রচারণায়, এই নাটক তার ব্যবসায় মা লক্ষ্মীর কৃপা বাড়িয়ে দেবে নিশ্চিত।
২) বাংলাদেশ দুর্নীতিতে অনেক বছর ধরে প্রথম, সেই যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে যদি কিছু মালপানি কামানো যায় তাতে মন্দ কি? দেশের ইমেজে মার গুলি – পত্রিকার কাটতি বাড়ল, রাতারাতি কিছু পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল চালু হল, তাতে বিজ্ঞাপনের বন্যা বইল।
৩) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেও প্রচুর ক্লিক পড়ল, ডলার এলো।
৪) প্রতিযোগিতার নামে মেয়েগুলারে নিয়া যা ইচ্ছা তাই করা গেল, যে দেবতা যেমন অর্ঘে তুষ্ট হন, তাতে করে আগামী দিনের ব্যবসার ক্ষেত্রগুলো আরও মজবুত আর সুপ্রশস্ত হল।
রীতি মতো ঘেন্না লাগে। নিজের উপর, সবার উপর, এই নোংরা সিস্টেম এর উপর। এই নষ্টামি যারা করছে তাঁরাই ব্যবসাসফল, টাকার মালিক, আরও বড় নষ্টামির নতুন নতুন আইডিয়ার প্রবর্তক।
যে মেয়েগুলো এই প্রতিযোগিতায় গেছে, তাঁরা ভাল করেই জানে পাঁঠা হিসেবে তাকেই বলি দিতে হবে সম্ভ্রম, আত্মসম্মান, ইচ্ছা-
সব জেনেও তাঁরা যায়, এখানেই সবচেয়ে অসহায় লাগে-
সুন্দরের প্রতিযোগিতা কখনও হতে পারে না, সুন্দর হবার জন্য সাধনা করতে হয়, অন্তরে, বাহিরে- এই সব প্রতিযোগিতা বিকৃত মানুষের আবিষ্কার, বিকৃত মানুষের প্রমোদের জন্য, যারা গোপনে লুকিয়ে থাকা নষ্টামিকে আয়োজন করে জায়েজ করার সুযোগ পায়। ধিক ধিক ধিক – থু থু ছিটাই তোদের ভণ্ডামিকে-
