33 C
Dhaka
বুধবার, জুন ৭, ২০২৩

রহস্যে ঘেরা পুতুল দ্বীপ!

বিশেষ সংবাদ

- Advertisement -

ভাবুনতো, পুরো একটি দ্বীপের বাসিন্দা শুধু পুতুল আর পুতুল। সাদামাটা কোন পুতুল নয়, ভয়ঙ্কর সব পুতুল। কারো হাত নেই, কারো পা নেই, কারো চোখ অথবা মাথা নেই। চারিদিকে সবুজ, নিস্তব্ধতার মধ্যে বাতাসে দোল খাচ্ছে এইসব ভয়ঙ্কর পুতুল। সব মিলিয়ে গা ছমছমে দ্বীপটির পরিবেশ।

“ইলসা ডে লাস মিউনিকাস” বা পুতুল দ্বীপের অবস্থান মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দক্ষিণে সোচিমিলকো নামক স্থানে।

প্রচলিত আছে, এই দ্বীপে পুতুল নিয়ে খেলছিলো তিন মেক্সিকান শিশু। খেলাচ্ছলে তারা পুতুলের বিয়ে দেয়। খেলার সময়ে হঠাৎ একটি শিশু উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পাশের একটি খালে সেই শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেই থেকে সাধারণ মানুষের কাছে এই দ্বীপটি হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর এক দ্বীপ এবং লোকমুখে প্রচলিত হয়ে আসছে দ্বীপটিকে ঘিরে নানা কাহিনী।

তবে নিজে থেকে এই পুতুলগুলো দ্বীপে আসেনি। ডন জুলিয়ান সানতানা নামের এক লোক ১৯৫০ সালের দিকে এই দ্বীপটিকে ধ্যান করার জন্য বেছে নেন। তার কাছে নাকি মৃত শিশুটির আত্মা আবদার করেছিলো যে, অনেক পুতুল এনে দ্বীপের চারপাশে টাঙিয়ে দেয়ার জন্য। এরপরই জুলিয়ান তার আশ্রমে চাষের সবজির বিনিময়ে মানুষের কাছ থেকে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকেন এবং দ্বীপের নানা জায়গায় টাঙিয়ে দিতেন শিশুটির আত্মাকে খুশি করার জন্য। এভাবেই দ্বীপের প্রত্যেকটি গাছে, পরিত্যক্ত বাড়িতে ঝুলে আছে পুতুলগুলো। অনেকে মনে করেন এ সবই জুলিয়ানের মনগড়া কাহিনী। দীর্ঘ ৫০ বছর তিনি এই দ্বীপে একাকী বসবাস করেন।

২০০১ সালের এপ্রিল মাসে এ দ্বীপে ঘটে আরেকটি রহস্যময় ঘটনা। ওইদিন ডন জুলিয়ান সেই খালটিতে মাছ ধরছিলেন, যে খালে শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। হঠাৎ তার মনে হয়, পানির নিচ থেকে কেউ একজন তাকে ডাকছে। এর কিছুদিন পর সেখান থেকে উদ্ধার হয় ডন জুলিয়ানের মৃতদেহ।

মানুষের মধ্যে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা দূর করার জন্য মেক্সিকান সরকার ১৯৯০ সালে এই দ্বীপটিকে ‘ন্যাশনাল হেরিটেজ’ ঘোষণা করে এবং দ্বীপটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পর্যটন এলাকা বানানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পর্যটকরা কদাকার পুতুল দেখে রাতে দুঃস্বপ্ন দেখেন এই অজুহাতে দ্বীপটিতে যেতে ভয় পান। সারা বছরে খুব বেশি পর্যটক এই দ্বীপে আসেন না। আর সেখানে পর্যটকেরা গেলে এখনো সাথে করে পুতুল নিয়ে যান এবং টাঙিয়ে দেন দ্বীপের কোনো এক জায়গায়।

মানুষের চেনা বাস্তবতার বাইরেও কি আর একটি জগত আছে? হয়তোবা সেখানে সত্যিই ঘুরে বেড়ায় মৃত মেয়েটির আত্মা। আবার হয়তো এমন কিছুই নেই সেখানে। পুরো ব্যাপারটাই মানব মনের কল্পনা। তবে, এতটুকু নিশ্চিত করে বলা যায় বাস্তবতা কিংবা কল্পনার রহস্য ঘেরা এই দ্বীপ এখনো অনেক অজানা প্রশ্ন তৈরি করে যাচ্ছে।

 

জাহা/

- Advertisement -

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বাধিক পঠিত