
তিনবার বিয়ে হতে হতেও হয়নি। জড়িয়েছেন এক ডজন প্রেমে। শিল্পপতি, খেলোয়াড়, নায়ক, পরিচালক, রোস্তোরা ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কে নেই ১৯৯৪ সালের বিশ্ব সুন্দরী বাঙালী তনয়া সুস্মিতা সেনের প্রেমিকের তালিকায়? সব শেষ কে?
বিশ্বসুন্দরীর ক্যারিশমায় কুপোকাত প্রেমিকের তালিকা ছাড়িয়েছে এক ডজনেরও বেশি আলোচিত ব্যক্তিরা।
তার প্রেমের তোড়েড় কখনো ভেঙ্গেছে প্রেমিকের ঘর। কখনো হয়েছে নড়বড়ে।
তিন তিনবার বিয়ের পিড়িতে বসতে বসতে শেষ সময়ে নিজেকে সামলে নিয়েছেন বিশ্ব সুন্দরী। তার এই দীর্ঘ প্রেমময় জীবন এখনো থেমে নেই। তার প্রেমে আছে চমকে দেবার মতো সব উপকরণ।
খোদ অনিল আম্বানি, মহেশ ভাট, পাক ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম, বয়সে ছোট রহমান শ্যাল থেকে শুরু করে সব শেষ গত বৃহস্পতিবার নাম জরায় আইপিএলের সাবেক কর্মকর্তা লোলিত মোদির সাথে।
১৯৭৫ সালে হায়দ্রবাদে এক বাঙালি পরিবারে জন্ম হয় সুস্মিতার। বাবা সুবীর সেন ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার। মা শুক্লা সেন জুয়েলারি ডিজাইনার। দুবাইতে শোরুম আছে তার।
ভয়ঙ্কর সুন্দরের ভালোবাসার এই সাবেক বিশ্ব সুন্দরীর কখনোই আগ্রহ ছিলোনা মডেলিং-এ। কৌতূহল বসেই পূরণ করে ফেলেন বিশ্বসুন্দরীর প্রতিযোগিতার আবেদন। মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় ১৯৯৪ সালে ঐশ্বরিয়া রাইকে হারিয়ে ১৮ বছর বয়সে জেতেন মিস ইন্ডিয়ার খেতাব। একই বছর মুকুট পড়েন মিস ইউনিভার্সের।
কুড়ি বছর বয়সে ১৯৯৬ সালের দস্তক সিনেমার মাধ্য দিয়ে পা রাখেন মায়ানগরি মুম্বাইয়ের বলিউডে। বিবি নাম্বার ওয়ান, শ্রিফ তুম, ফিজা, আঁনখে, মেহু না’র মতো অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। চমকপ্রদ সাফল্য আসেনি তার ক্যারিয়ারে। তবে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হামেশাই চর্চায় ছিলেন সুস্মিতা সেন।

মিস ইউনিভার্স এর জীবন জানো চিত্রনাট্য। ইন্ডাস্ট্রির নামি ব্যক্তিত্বের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় সরগরম ছিল। রানদীপ কুটা থেকে মুম্বাইয়ের রেস্তরা মালিক রিতিক ওয়াজিব, পরিচালক বিকরাম ভাট। কখনও আবার নাম জড়িয়েছেন বয়সে অনেক ছোট রহমান সালের সাথে।
তবে সব ছাপিয়ে সুস্মিতার জীবনের প্রথম প্রেম রজত তারা। যখন তিনি পরেননি বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট। দিল্লীবাসি তরুনী সুস্মিতা রজতের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। তবে অল্প দিনই ছিলো সেই সম্পর্ক।
দাস্তাকে কাজ করার সময় তার জীবনে আসেন পরিচালক বিক্রম ভাট। ঘর ভাংগে পরিচালকের। এরপর হোটেল মালিক সঞ্জয় নারাং।
এরপর কারমা এনড হোলি ছবির স্যূটে সুস্মিতার সাথে আলাপ হয় রানদীপ বুটা। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। রীতিমতো সোরগল ফেলেছিলো তাদের সম্পর্ক। তবে যতটা গর্জে ছিলো ততোটা বর্ষণ হয়নি। অল্প দিনে সম্পর্ক বিচ্ছেদ। ছন্দ পতন।
এরপর বহু পুরুষ ঠাঁই নিয়েছিলেন সুস্মিতার ভালবাসার নহরে। বান্টি সাস্তেব, হট মেলের প্রতিষ্ঠাতা সাবির ভাটিয়া, পরিচালক মুদাচ্ছের আজিজ, মানাব মিনার। তবে সবই ছিলো স্বল্প মেয়াদে।
তবে আলোড়ন তোলে পাক ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরামের সাথে সুস্মির সম্পর্ক। ২০০৮ সালে এক রিয়েলিটি শো’র বিচারকের দায়িত্ব পালনের সময় পরিচয় তাদের। ২০০৯ সালে মারা যায় আক্রামের স্ত্রী। এরপর থেকেই প্রকাশ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা মেলে তাদের। তবে সেটিও বেশিদিন টেকেনি। বলিউডের গুনজন আছে তারা বিয়েও করেছিলেন।
সুস্মিতা সেনের আলোচিত আরেক প্রেমিক অনিল আম্বানি। টিনা মুনিমের সাথে অনিলের দূরত্বের সুযোগে কাছে চলে যান সুস্মিতা। উপহার পান ২২ ক্যারেটের হিরার আংটি। স্ত্রীকে ডিভোর্সও দিতে উদগ্রীব ছিলেন এই প্রেমিক। তবে শেষ রক্ষায় এগিয়ে আসে আম্বানী পরিবার।
এরপর বয়সে ছোট রহমান শ্যালের সাথে তিন বছরের পরিণয়। সেসময় দুই মেয়েকে নিয়ে বেড়াতেও বেরুতেন তারা। তবে গত বছর ইতি ঘটে সেই সম্পর্কেরও।
আবার গত বৃহস্পতিবার সুস্মিতা সেনের প্রেমিকের তালিকায় উঠে এসেছে নতুন প্রেমিকের নাম। এবার আইপিএলের সাবেক কর্তা লোলিত মোদি। ফেসবুকে একগাদা ছবি প্রকাশ করে নিজেদের সম্পর্কের কথা প্রকাশ করেন লোলিত।
স্বপরিবারের মালদ্বীপ ও সারদিনিয়ায় ছুটি কাটানোর কথা উল্লেখ করে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন লোলিত। সুস্মিতার সাথে পোস্ট করা ছবিতে লিখেছেন নিজের বেটার হাল্ফ। ছবিতে বিশ্ব সুন্দরীর হাতে হিরের আংটি দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন বাগদান হয়ে গেছে। তবে সে ভুল ভাঙ্গাতে আরেক পোস্টে ললিত জানান আপাতত ডেট করছেন তারা।
বঙ্গ তনয়া সুস্মিতা কখনও গোপন করেনি সুস্মিতা। খোলামেলা সুস্মিতা জানান, বিয়ে ও সম্পর্কের বিষয়ে শেষ মুহুর্তে সিদ্ধান্ত বদলানোটা সব সময়ই সঠিক ছিলো।
মাজহারুল ইসলাম/ফই
