
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আজ বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সব ধরণের ক্রিকেটে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু) একটি কল রেকর্ড পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আইসিসির দুর্নীতি-বিরোধী কোডের তিনটি আইন লঙ্ঘনের অপরাধ সাকিব মেনে নেওয়ার পর এ শাস্তি দিয়েছে আইসিসি। আকসুর কাছে তথ্য না জানানোয় এ শাস্তি পেয়েছেন সাকিব।
প্রায় দুই বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচকে কেন্দ্র করে সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল এক জুয়াড়ি। তবে সেই অনৈতিক প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন সাকিব। নিয়ম অনুসারে, বিষয়টি আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট আকসুকে জানানোর কথা ছিল সাকিবের।
আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টে বলা আছে, বাজিকরদের কাছ থেকে ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাতে হবে। না হয় আইসিসির দুর্নীতি দমন সংস্থা আকসুকে অবহিত করতে হবে। সে খবর নিজে লুকিয়ে রাখলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। কিন্তু সাকিব বিষয়টি আকসুকে অবহিত করেননি।
পরবর্তীতে জুয়াড়িদের ফোন কল ট্র্যাক করে বিষয়টি নিশ্চিত হয় আকসু। এ বিষয়ে দীর্ঘ তদন্ত চালায় তারা। সম্প্রতি সাকিবের সাথেও কথা বলে আকসু।
তবে আপিল করলে সাকিবের শাস্তি কমতে পারে।
এর আগে সাকিব না জেনে ভুলটি করেছেন- আকসুর মুখোমুখি হয়ে নিঃশর্তভাবে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন। তিনি আশা করছেন, সাজার মেয়াদ হয়তো খুব বেশি দিন হবে না।
আইসিসির ২.২.৪ থেকে ২.২.৬ ধারায় অভিযুক্ত হয়েছেন সাকিব। আইসিসি দুর্নীতি দমন বিভাগের নিয়ম ও শৃঙ্খলা মেনে চললে এই শাস্তি ছয় মাসে নেমে আসতে পারে। তবে এটাই এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন শাস্তি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এ বিষয়ে সাকিবের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে। বিসিবির ভাষ্য হচ্ছে, যেহেতু সাকিব জুয়াড়ির প্রস্তাব গ্রহণ করেননি, তাই নীতিগতভাবে সাকিবের পাশে থাকবে বিসিবি। তবে বিষয়টি নিয়ে সাকিবকে সংবাদমাধ্যমের সাথে বেশি কথা না বলতে পরামর্শ দিয়েছে বিসিবি।
তবে সাকিবের এই ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি গোপন করা নিয়ে আইসিসি, বিসিবি কিংবা সাকিবের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি বা ব্যাখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি।
সাকিবের এই বিষয়টি এমন এক সময় সামনে এলো, যখন বাংলাদেশের ক্রিকেট উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভালো করতে পারছে না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে টেস্টে। ক্রিকেটাররা করেছেন ধর্মঘট। বিসিবির নিয়ম ভেঙে সাকিব চুক্তি করেছেন একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সাথে। এছাড়াও সামনেই আছে ভারত সফর। সেখানে যাচ্ছেন না তামিম ইকবাল।
