
আকস্মিক বন্যায় লন্ডভন্ড লিবিয়ার ডেরনায়, চারদিকে এখন হাহাকার। দুর্যোগের পাঁচ দিন পরও, অনেক এলাকায় সহায়তা পৌঁছানো যায়নি। এদিকে, মৃতের সংখ্যা ১১ হাজারে পৌঁছেছে। নিখোঁজ আরও ১০ হাজার মানুষ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের আসল সংখ্যা হতে পারে ২০ হাজারের মতো।
বন্যায় হঠাৎ করেই এতো মানুষের যে প্রাণহানি হতে পারে, তা অনুমান করা ছিলো প্রায় অসম্ভব। কিন্তু, তেমন ঘটনাই বাস্ততে দেখতে হলো লিবিয়ার ডেরনাবাসীকে।
বিভিন্ন মাধ্যমে যে ভিডিও ও স্থিরচিত্র এসেছে, তা এক কথায় রোমহর্ষক। ধরা যাক, এক বালতি পানি ছুড়ে দেয়া হলো কোনো পিঁপড়ার বাসায়। তাতে যেভাবে শত শত প্রাণ চোখের পলকেই ভেসে যাবে, তেমন পরিণতিই হয়েছে লিবিয়ার ডেরনায়।
ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলসের প্রভাবে টানা ভারি বৃষ্টি হচ্ছিলো অঞ্চলটিতে। এমন অবস্থার মধ্যে দুটি নদীর বাঁধ হঠাৎ ধসে যায়। আর তাতেই আচমকা বিপুল পানি ছিটকে যায়। এক ঝটকায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় ডেরনা শহরের পুরো জনপদ।
এরপর পেরিয়েছে পাঁচ দিন। বাড়িঘর, রাস্তাঘাটসহ অন্যান্য অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি এতোটা যে, অনেক এলাকাতে যাওয়াই যাচ্ছে না। এখানে সেখানে পড়ে আছে মরদেহ। সেগুলো শনাক্ত করাও দুরুহ হয়ে পড়েছে। কোথাও কেউ বেঁচে আছে কি না, সেই খোঁজ চলছে দিনরাত। জীবিত ও মৃতদের অবস্থান শনাক্ত করাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রতি মুহূর্তে মিলছে নতুন নতুন মরদেহ। নিশ্চিত প্রাণহানি ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। বন্দরনগরী ডেরনার মেয়রের শঙ্কা, মৃতের সংখ্যা ২০ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
প্রাণ হারানোদের কবর দেয়াও কঠিন এক যজ্ঞ। সবার ঠাঁই হচ্ছে গণকবরে। এদিকে, ঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিনরাত কাটাচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তাদের সামনে এখন নতুন আতঙ্ক, দূষিত পানিতে ছড়িয়ে পড়া নানান রোগবালাই।
জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলছে, পূর্বাভাস দেয়া হলে, বেশিরভাগর মৃত্যুই এড়ানো যেতো। কিন্তু, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে দুই অঞ্চলে বিভক্ত লিবিয়ায়, এমন সরকারি সেবা পাওয়া এখন সোনার হরিণ।
তানভীর জনি/ফই
