24 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৪, ২০২৩

ভারতের উত্তরাখণ্ডের মাটির নিচে দেবে যাচ্ছে আস্ত শহর

বিশেষ সংবাদ

Juboraj Faishal
Juboraj Faishalhttps://www.nagorik.com
Juboraj Faishal is a News Room Editor of Nagorik TV.
- Advertisement -

পুরো আস্ত একটি শহর মাটির নিচে দেবে যাচ্ছে। একের পর এক ভূমিকম্প, ভূমিধস ও বন্যায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ভারতের উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ শহর। মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে ৫ দশমিক ৪ সেমি মাটির নিচে ঢুকে গেছে। আশেপাশের বাড়ি ও হোটেলগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাঁটল। সরিয়ে নেয়া হয়েছে হাজারো পরিবারকে।

ছবির মতো সুন্দর শহর ভারতের উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ। পর্যটনের জন্য বিখ্যাত ও জনপ্রিয় এই শহরটি দিন দিন মাটির নিচে দেবে যাচ্ছে। অলকানন্দা নদীর তীরের এই জনপদ ধীরে ধীরে ডুবে যেতে পারে। এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল বিশেষজ্ঞদের। এই এলাকার ধারণ-ক্ষমতা কম। দুর্বল এই শহরের মাটির উপর বেশি চাপ না দিতে ১৯৭৬ সালেই প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছিল।

হিমালয় পর্বত অভিযান ও পর্বতারোহণের জন্য প্রতি বছর প্রচুর মানুষ এই শহরটিতে ভিড় জমান। বদ্রীনাথ ও হেমকুণ্ড সাহিবগামী হিন্দু ও শিখ তীর্থযাত্রীদের যাওয়ার অন্যতম বিরতির জায়গা এই জোশিমঠ। আড়াই হাজার মিটার উঁচুতে হিল স্টেশন ও পর্যটন কেন্দ্রের জন্য বিখ্যাত ১৭ হাজার বাসিন্দার এই শহর।

যত সময় যাচ্ছে, তত শোচনীয় হচ্ছে জোশীমঠের পরিস্থিতি। ঘর, দোকান, হোটেল, রাস্তা সবকিছু গ্রাস করছে বিরাট বিরাট ফাঁটল! উপগ্রহচিত্রে জোশীমঠের অবস্থা তুলে ধরেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার। দুটি সময়কালে দেখানো হয়েছে ভূমিধস। গত ৭ এপ্রিল থেকে ৯ নভেম্বর এই ৭ মাসে ৮ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার এবং ২৭ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি মাত্র ১২ দিনে ৫ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার জমি দেবে গিয়েছে ।

জোশীমঠের রাস্তা, বাড়ি ও হোটেলগুলিতে দেখা দিয়েছে বিশাল আকারের ফাঁটল। ভাঙনের মুখে ৬৭৮টি বাড়ি ও হোটেল। মৃত্যুভয় গ্রাস করায় রাতারাতি ভিটেমাটি ছাড়া হচ্ছেন এই শহরের বহু মানুষ। ৪ হাজারেরও বেশি পরিবারের ঠাঁই হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ার প্রাণভয়ে ঘর ছাড়ছেন বাসিন্দারা।

জোশীমঠকে বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করেছে রাজ্য উত্তরাখণ্ড সরকার। যে হারে ভূমিধস হচ্ছে, তাতে জোশীমঠ সম্পূর্ণ ধসে যেতে খুব বেশি দিন লাগবে না। এ অবস্থার জন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পকে দায়ী করছেন দেশটির পরিবেশবাদীরা।

২০২১ সালে চামোলি জেলায় হড়কা বানে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ভেসে যায় দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভূর্গর্ভস্থ একটি প্রাকৃতিক জলাধারা। দাস্থানীয়দের অভিযোগ, এনটিপিসির জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ১২ দশমিক ১ কিমি দীর্ঘ সুড়ঙ্গ তৈরির জন্যই জোশীমঠের মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, নির্বিচারে পাহাড় কাটা ও অপরিকল্পিত অবঠামো নির্মাণকেও দায়ী করেছেন তারা।

তানভীর জনি/ফই

- Advertisement -

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বাধিক পঠিত