
১৬ বছর আগে কো পাইলট স্বামীকে হারান বিমান দুর্ঘটনায়। এরপর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন পাইলট হয়ে স্বামীর স্বপ্নপুরণ করবেন। সবশেষ ফ্লাইটি সফলভাবে পরিচালনা করলেই কো পাইলট থেকে ক্যাপ্টেন হয়ে যেতেন ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ‘৯ এন-এএনসির কো পাইলট অঞ্জু খাতিওয়াদা। কিন্তু ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ কেড়ে নিল তার প্রাণ স্বপন দুটোই।
রবিবার সকালে কাঠমান্ডু থেকে পর্যটন শহর পোখারার উদ্দেশে উড়াল দেয় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ‘৯ এন-এএনসি এটিআর–৭২’ মডেলের উড়োজাহাজ। ক্যাপ্টেন কামাল কেসির সঙ্গে ছিলেন কো পাইলট অঞ্জু খাতিওয়াদা। সকালে উড়োজাহাজটি পোখারা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় সেতি নদীর তীরে বিধ্বস্ত হয়।
৭২ যাত্রীর সাথে অঞ্জুর দেহও ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্বামীর মতোই একইভাবে প্রাণ গেলো কো-পাইলট অঞ্জুর। শুধু তাই নয়, স্বপ্নপূরণের মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগেই থেমে যায় অঞ্জুর স্বপ্নযাত্রা। কারণ এই যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি সফলভাবে অবতরণ করাতে পারলেই কো পাইলট থেকে ক্যাপটেন পদে উন্নীত হতেন অঞ্জু।
২০০৬ সালে একইভাবে প্রাণ হারান তার স্বামী কো পাইলট দীপক পোখারেলও। ঘটনাচক্রে সেটিও ছিল এই ইয়েতি এয়ারলাইন্সেরই একটি বিমান। দীপকসহ পোখারেল জুমলা বিমানবন্দরে আরও ৯ জন নিহত হন। তখনই অঞ্জু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন পাইলট হয়ে তার স্বীমার স্বপ্নটা পূরণ করবেন। স্বামীকে হারানোর চার বছর পর পাইলটের ওপর প্রশিক্ষণ শেষ যুক্তরাষ্ট্র থেকে নেপালে ফিরে আসেন তিনি।
ফিরেই ইয়েতি এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ চালানোর মধ্য দিয়ে পেশাজীবন শুরু করেন অঞ্জু খাতিওয়াদা। যা দেশটির সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ বিমান।
অঞ্জুর স্বামী দীপক প্রথমে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার চালাতেন। পরবর্তীতে ইয়েতি এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগ দেন। স্বামীকে হারানোর ১৬ বছর পর একই মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি হলে তিনি। অঞ্জুর আত্মীয়রা জানান, নিহত অঞ্জু এবং দিপক রেখে গেছেন ২২ বছর বয়সী এক মেয়ে সন্তানকে।
