
হালফ্যাশনের প্রতি তরুণ প্রজন্মের স্বল্পস্থায়ীত্বের ভালোবাসাকে পৃথিবীর ভবিষ্যতের জন্য আর সুনজরে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। ব্রিটেনের আইন প্রণেতারা বলেছেন, বৈশ্বিক পরিবেশ বিপর্যয়ের পেছনে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিগুলো ভূমিকা রাখছে।
ইংল্যান্ডের হাউজ অব কমনসের পরিবেশ নিরীক্ষা কমিটির বক্তব্য, ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিগুলো তাদের ভোক্তাদেরকে বিভিন্নভাবে চরম ভোগবাদী করে তুলেছে। আমরা এখন কেবলমাত্র ‘গতবছরের’ বলেই একটি পোশাককে বাতিল করে দিচ্ছি, ফেলে দিচ্ছি, কিনে নিয়ে আসছি নতুন ‘ট্রেন্ডি’ পোশাক।
কিন্তু বাতিল পোশাকগুলো পুনরায় ব্যবহারের তেমন কোনো পথ খোলা থাকছে না। তাই ব্রিটেনে সেগুলো মাটিভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু এতেও তো শেষরক্ষা হচ্ছে না। ঝড়-বৃষ্টিতে ধুয়ে ওইসব কাপড় থেকে বের হচ্ছে নানারকম ফাইবার। একটি জিন্স প্যান্টের পুরো ব্যবহারিক জীবনে এর ধোয়ার পেছনে ৩ হাজার ৭৮১ লিটার পানি ব্যয় হয়। আমরা বাড়িতে যখন কাপড় ধুই, প্রতি ধোয়ায় ৭ লাখ ফাইবার কাপড় থেকে বেরিয়ে যায়। পানিচক্রের পরিণতিতে এসব ফাইবার জায়গা করে নিচ্ছে সাগরে। বছরে ৫ লাখ টন মাইক্রোফাইবার সাগরে পড়ছে। জমা হচ্ছে মাছসহ বিভিন্ন জলজ জীবের শরীরে। খাদ্যচক্রের পরিণতিতে তা আবার চলে আসছে আমাদের খাবার টেবিলে মুখরোচক সি-ফুড হিসেবে।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইংল্যান্ডে পোশাক ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি, মাথাপিছু ২৬.৭ কেজি। গেল বছরে দেশটিতে ২৩৫ মিলিয়ন পোশাক মাটিভরাটের কাজে লাগাতে হয়েছে। গত দশকের তুলনায় মানুষ দ্বিগুণ হারে পোশাক কিনছে। জরিপ বলছে, বর্তমান পরিস্থিতির লাগাম এখনই টেনে না ধরলে ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব পড়বে তার এক চতুর্থাংশ দায় ইংল্যান্ডের ওপর বর্তাবে।
মাহা/তুখ
