19 C
Dhaka
শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

উপকূলজুড়ে রিমালের ক্ষত, প্রাণহানি বেড়ে ১৬ জন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল খুব ভয়ংকর রূপ না নিলেও দীর্ঘ সময় ধরে উপকূলে অবস্থান করেছে। ঘূর্ণিতে যত না ঘায়েল করেছে, তারচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে প্রবল বৃষ্টিতে। ফলে রিমাল বিদায় নেয়ার পরেও উপকূলজুড়ে ক্ষতের দাগ। ঘরবাড়ি, সহায়-সম্বল হারিয়েছে মানুষ। উপকূলের অর্ধকোটি মানুষের চোখে এখন অমাবস্যা।

সরকারি হিসাবে দেশের ১৯ জেলার মানুষকে কাঁদিয়েছে রিমাল। কেড়ে নিয়েছে ১৬ প্রাণ। বিধ্বস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি, গাছপালা। গ্রামীণ সড়ক আর বেড়িবাঁধ ভেঙে একাকার। পানিতে ডুবেছে গ্রামের পর গ্রাম। পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, ফসল।

রিমালের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে নয়টি গ্রামসহ ১৬টি গ্রাম এবং কয়েকটি চর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ও বাজার এবং চর গাসিয়া, ঢাল চর, দমার চরসহ বেশ কয়েকটি চরের রাস্তাঘাট ও দোকানপাট প্লাবিত রয়েছে। দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পটুয়াখালীতে উপকূলজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসলের খেত, মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় অনেকের ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েকটি উপজেলায়।

রাঙ্গাবালীতে রিমালের আঘাতে ৬ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ। ভেসে গেছে দেড় হাজার পুকুর ও ঘেরের মাছ। মারা গেছে পাঁচ শতাধিক গবাদিপশু। উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে আজ চারদিন।

ভোলায় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাড়ে সাত হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অতি জোয়ারে তলিয়ে গেছে ভোলার ২০টির বেশী গ্রাম। চরফ্যাশন ও মনপুরায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। এছাড়াও রাস্তায় ও বিভিন্ন জায়গায় গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে  জেলার বেশীরভাগ এলাকা।

রেমালের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মেঘনা উপকূলীয় এলাকা লক্ষ্মীপুরে। জোয়ারের পানিতে জেলার কমলনগর নাসিরগঞ্জ এলাকায় ১০০ মিটারেরও বেশি বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। পানিবন্দী শতাধিক পরিবার।

৭৫ ইউনিয়ন এর ১০০ এর অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাটে। আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে ১ লাখ এর বেশি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫ হাজারের বেশি বাড়িঘর। ১ হাজার এর বেশি গাছ পালা ও ১শর  বেশী বৈদ্যুতিক খুঁটি উপরে পড়েছে। জলোচ্ছ্বাসে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ থেকে ৭ ফুট।

যশোরে দমকা হাওয়ার সাথে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে রাতভর। এতে কোথাও কোথাও গাছপালা ভেঙে পড়েছে, স্থবির হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। এছাড়াও, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে উপকূলের তিন জেলায় ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শত শত গ্রামে চিংড়ির ঘেরসহ ফসলি জমিতে নোনা পানি প্রবেশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন