১৪ এপ্রিল বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় উদযাপিত হয়েছে শত বছরের পুরনো উৎসব পয়লা বৈশাখ। বর্ষবরণের উৎসবের আমেজ দেশজুড়ে। রমনার বটমূলে হয় ছায়ানটের নিয়মিত আয়োজন।
তিমির বিনাশের প্রত্যাশা আর মানবতার জয়গান গেয়ে পহেলা বৈশাখের রমনা বটমূলের বর্ষবরণে আসেন সববয়সী মানুষ। সকাল সোয়া ৬ টার দিকে আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে শুরু হয় বর্ষবরণ। বাঁশির সুরের মূর্ছনায় বছরের প্রথম সূর্যকে স্বাগত জানায় শিল্পীরা। নতুন বছরে সুখ ও সমৃদ্ধির আশা তাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। বর্ষবরণ উৎসবগুলোর নিরাপত্তায় তৎপর ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনে চারুকলার ভেতরে হাতি ও টেপা পুতুলের বিশাল আকৃতির ভাস্কর্য তৈরি হয়।
রাজধানীর বাইরে অন্যান্য জেলা ও গ্রামাঞ্চলেও পয়লা বৈশাখে বসে বৈশাখী মেলা। মেলায় ক্রেতাদের জন্য রাখা হয় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী কারুপণ্য। মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা পাওয়া যায় মেলায়। এ উপলক্ষে মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত থাকেন বর্ণিল সব মাটির জিনিসপত্র বানাতে।
বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ মনে করেন, ১৫৫৬ সালে ভারতের মোঘল সম্রাট জালালুদ্দিন মোহাম্মদ আকবরের শাসনামল থেকে বাংলা নববর্ষ উদযাপন শুরু হয়। যদিও বাংলা সন শুরু হয়েছিল আরো পরে, কিন্তু এটি সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহনের সময় থেকেই কার্যকর বলে ধরা হয়। ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেন, বিভিন্ন সময়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপন বাঙালির প্রতিবাদের ভাষা হয়েও উঠেছে। বিশেষ করে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর আইয়ুব খানের আমল এবং আশির দশকের শেষের দিকে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা ছিল বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা।