32 C
Dhaka
শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪
spot_imgspot_img

মনের চোখে ছবি আঁকতে পারেন না যারা

নিজের কল্পনাকে যারা মনের চোখে চিত্রায়িত করতে পারেন না, তারা ভুগছেন অ্যাফানতাশিয়ায়। অধিকাংশ মানুষই তাদের মাথায় চিত্রায়ণ করতে পারেন; কি হবে একটা অ্যাপলের চেহারা, কেমন হবে তাদের রান্না ঘর অথবা সেরা বন্ধুর হাসি। তবে, সবাই পারেন না। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মধ্যে তীব্র মাত্রার অ্যাফানতাশিয়ায় ভুগছেন ১ শতাংশ মানুষ।

এ ধরনের মানুষ চেহারা সনাক্ত করতে সমস্যায় ভোগে, কোনো মিউজিকের শব্দ মনে রাখতে পারে না, বালুযুক্ত শক্ত কাগজ অনুধাবন করতেও ব্যর্থ হয়। বিজ্ঞান, গনিত অথবা কম্পিউটার বিষয়ের কাজে এই মানুষদের অংশগ্রহণ বেশি। ৬ শতাংশের মতো মানুষ কিছুটা অ্যাফানতাশিয়ায় ভুগছেন। স্নায়ুতন্ত্রের অধ্যাপক অ্যাডাম জিমান মনে করেন, এটা কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি নয় এবং কল্পনা শক্তিও কমিয়ে দেয় না। তবে, নিত্যজীবনে সূক্ষ্ণ কিছু পার্থক্য তৈরি হয়।

অ্যাফানতাশিয়ায় ভুগছেন ৪৩ বছরের ব্রিটিশ নারী ম্যারি ওয়েদেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এটা নিঃসন্দেহে খুবই আনন্দদায়ক, যখন ভাবি অন্যরা তাদের মস্তিস্কে চিন্তা শক্তি দিয়ে ছবি আঁকতে পারে। ‘‘আমি বুঝতে পারিনা- তারা আসলে কি বোঝায়। কোথায় ছবি? এটা দেখতে কেমন?’’ আমি মনে করি, ‘‘যতক্ষণ চোখে না দেখি ততক্ষণ কিছু নেই।’’

বিয়ের দিনসহ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ছবি মনে করতে পারেন না ম্যারি। এমনকি কাছে না থাকলে সে তার দুই সন্তানের চেহারাও মনে করতে পারেন না।

‘‘আমি কোনো ছবি আনি না। আমার সব স্মৃতি আছে। আমি শুধু ভিন্নভাবে সেগুলো মনে করি। কেউ একজন বলেছে, হার্ডওয়ার সব ঠিক আছে, মনিটরটা চালু হয়নি।’’ তিনি বলেন।

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময়ই ম্যারি বুঝতে পারেন যে তিনি তার বন্ধুদের থেকে আলাদা। তার কাছে বিষয়টি বিস্ময়কর ছিলো যে তার স্বামী তাদের আগের সব ঘটনা সিনেমার মতো চিত্রায়ণ করতে পারে।

ম্যারি বলেছেন, তিনি খুব ভালো বক্তা। তবে, কোনো কিছুই সে ধারণ করতে পারে না। তার ভাষায়, ‘‘এখানে সবকিছুই শব্দ। অনুভূতিটা গভীর। নিজস্ব কঠোর অনুভূতি চালিত আবেগী মানুষ আমি। তাই যখন কিছু মনে করি; এটা ছবি নয়, কিছু অনুভূতি। এখন কি দেখছি সেটাই বিষয়, কয়েক মিনিট আগে কি দেখেছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’’

অ্যাফানতেশিয়ার উপকারি দিক; মানুষের মানুসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় কাজ করে। কারণ, বাস্তব জীবন নিয়েই এখানে বসবাস বেশি। ভয়ানক এবং মানুসিকভাবে চাপ বাড়তে পারে- এমন কিছু ভাবতে হয় না।

মনের এই চিত্রের একটি বিপরিত দিকও আছে। কিছু মানুষ আছে যারা মস্তিস্কে চিত্র এতোটাই পরিস্কার দেখে যে বলতে পারে না; সেটা কি কল্পনা নাকি বাস্তব। একে বলা হয় হাইপারফ্যানতাশিয়া। আমাদের মাঝে ৩ শতাংশ মানুষ এভাবে বিশ্বকে দেখতে পারে। এ ধরনের মানুষ বেশি ‍সৃজনশীল হয়। অধ্যাপক জেমান জানিয়েছেন, গত ১ দশকে এই দুই ধরনের ১৭ হাজার মানুষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

spot_img
spot_img

আরও পড়ুন

spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন