আমাদের চারপাশের মানুষগুলো অলসতাকে খুব একটা পছন্দ করে না। অলস লোকজনকে তার পরিবারের কেউ পছন্দ করে না, কর্মক্ষেত্রেও কেউ তাদেরকে টিমে চায় না। সবখানেই কর্মঠ উদ্যমী মানুষের চাহিদা!
‘অলস’ শব্দটি এখন অমর্যাদার, শব্দটি গালি হিসেবেও ভদ্রসমাজে ব্যবহার করা হয়। অলস বলতেই চোখে ভাসে শুয়ে শুয়ে খাবার খাচ্ছে, এমন একজনের ছবি। তবে বিষয়টি কিন্তু আপনাকে বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় সুবিধাই দিয়েছে। অলসতা তো শক্তি বাঁচানোর উদাহরণও হতে পারে! বিষয়টি নিয়ে এইভাবে চিন্তা করলে কেমন হয়?
মানব সভ্যতার বিকাশের ধারাবাহিকতায় যেসব অভিজ্ঞতা আমরা অর্জন করেছি তার মধ্যে অন্যতম হল শক্তি বাঁচিয়ে রাখা এবং তা প্রয়োজন ছাড়া খরচ না করা। এই বিষয়টিই আলস্য হিসেবে আমাদের সবার আচরনে রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, আপনার পায়ে রোবটিক পা যুক্ত করে হাঁটার অভ্যাস করালে আপনার হাঁটার যে স্বাভাবিক শক্তি ব্যয় তা বেঁচে যায় ঠিকই, কিন্তু রোবটিক পা খুলে নিয়ে আবার আপনাকে নিজের পায়ে হাঁটতে দিলে আপনার হাঁটতেই ক্লান্তি লাগবে, আপনি অলসতা দেখাবেন। এমনকি রোবটিক পা ব্যবহার না করে স্বাভাবিক পায়ে নির্দিষ্ট পথ হাঁটতে যদি মাত্র ৫% শক্তি খরচ হয় তবুও এই গবেষণায় আপনি আলস্য দেখাবেন। এর মানে দাঁড়ায়, অলসতা আমাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি।
যদি প্রয়োজনীয়তা উদ্ভাবনের জননী হয়, তাহলে আলস্য উদ্ভাবনের বাবা!!!
কিভাবে?
শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখতে গরম জামাকাপড় লাগে, কিন্তু স্মার্টফোন কী কাজে লাগে??? আমাদের স্মার্টফোন লাগে কারণ আমরা অলস! আমরা একের ভেতর সব চাই। অন্যদিনে কোনো একজন ছিলেন যার টাকার দরকার ছিল। তাই তিনি স্মার্টফোন উদ্ভাবন করলেন আর পৃথিবীর তাবৎ অলস মানুষজনের কাছে বেচে টাকা কামালেন!
স্মার্টফোনধারীরা রাগ করছেন! আচ্ছা বলুন তো, … মুভিটির প্রধান চরিত্রে কে অভিনয় করেছিলেন? মনে পড়ছে না? যারা মুভিটি দেখেছেন তারা মনে করার চেষ্টা করুন আর মনে করতে কষ্ট লাগলে স্মার্টফোনে ইন্টারনেটে সার্চ দিন।
অলসতা আমাদের মজ্জাগত, আর কী কী উপায়ে অলস সময় কাটানো যায় তা খুঁজে বের করাই প্রমাণ করে আপনি কত চালাক। আর ঠিক কোন সময় অলসতা ঝেড়ে ফেলে কাজে লেগে পড়তে হবে তা যদি আপনার জানা থাকে তাহলে প্রমাণ হবে যে, আপনি আসলেই চালাক।