20 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

আজ থেকে শুরু নোবেল পুরস্কার ঘোষণা

বহুল কাঙ্ক্ষিত নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হচ্ছে আজ সোমবার (৭ অক্টোবর)। প্রথা অনুযায়ী, প্রতি বছরের অক্টোবরের প্রথম সোমবার নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি। এই দিন চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পুরস্কারজয়ীর নাম ঘোষণা হয়। পরবর্তী ছয় দিন ছয় বিভাগে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম থেকে আজ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টা ও বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বা বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

এ বছরের নোবেল পুরস্কারের ঘোষণাগুলো ৭ থেকে ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। সব ঘোষণা nobelprize.org ও নোবেল পুরস্কার কমিটির ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

নরওয়ে থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হয় এবং সুইডেন থেকে ঘোষণা করা হয় সাহিত্য ও অর্থনীতির মতো অন্য পুরস্কারগুলো।

চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য ও শান্তিতে পুরস্কারগুলো সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থ থেকে দেওয়া হয়। সুইডিশ শিল্পপতি নোবেল ডিনামাইটের উদ্ভাবক ছিলেন। তার মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সালে এ পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।

১৯০১ সালে জার্মান জীববিজ্ঞানী এমিল ফন বেরিংকে ডিপথেরিয়া রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর সিরাম থেরাপি বিষয়ে গবেষণার জন্য প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ গত বছর ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার প্রথম দিন করোনাভাইরাসের টিকার প্রযুক্তি আবিষ্কারের জন্য দুই বিজ্ঞানীকে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। নোবেল বিজয়ী ওই দুই বিজ্ঞানী হলেন ক্যাটালিন ক্যারিকো ও ড্রু ওয়েইসম্যান।

এমআরএনএ করোনার টিকার প্রযুক্তি করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর আগে পরীক্ষামূলক অবস্থায় ছিল। তবে এ টিকা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছে। এখন ঠিক একই ধরনের এমআরএনএ প্রযুক্তি ক্যানসারসহ অন্য নানা রোগের টিকা আবিষ্কারের গবেষণার কাজে লাগানো হচ্ছে।

ধারণা করা হচ্ছে, এবার চিকিৎসা ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হতে পারে লিপিড নিয়ে উদ্ভাবনী কোনও গবেষক দলকে। বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ক্ল্যারিভেট ধারণা করছে, প্রথম দিন চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পেতে পারেন লিপিড বিপাকের জেনেটিকস নিয়ে গবেষণা করা কোনো বিজ্ঞানী বা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া মস্তিষ্কের আবেগ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রেও এ পুরস্কার দেওয়া হতে পারে।

চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। এটি প্রদান করে সুইডেনের কারোলিন্‌স্কা সমিতি। ১৮৯৫ সালে সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল যে পাঁচটি ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদানের ব্যাপারে দলিলে উল্লেখ করে গিয়েছিলেন, তার মধ্যে এটি অন্যতম। এই পুরস্কার ১৯০১ সাল থেকে নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে।

এই পুরস্কারের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে নোবেল ফাউন্ডেশন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে এটি সর্বজনস্বীকৃত। প্রতি বছরের ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বিজ্ঞানী নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে এই পুরস্কার আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়ে থাকে।

বিজয়ী বিজ্ঞানী সুইডেনের মহিমান্বিত রাজার কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। প্রত্যেক নোবেলবিজয়ী ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া একটি সবুজ স্বর্ণপদক, একটি ডিপ্লোমা ও একটি আর্থিক পুরস্কার পান। ২০২৪ সালের হিসাবে নোবেল পুরস্কারের আর্থিক পুরস্কার হলো এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা, যা ১০ লাখ ৩৫ মার্কিন ডলারের সমান।

একটি নোবেল পুরস্কার তিন জনের বেশি ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করা হয় না, যদিও নোবেল শান্তি পুরস্কার তিন জনের বেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া যেতে পারে। নোবেল পুরস্কার মরণোত্তর দেওয়া হয় না। তবে যদি কোও ব্যক্তিকে পুরস্কার দেওয়া হয় এবং তিনি এটি পাওয়ার আগে মারা যান, তবে পুরস্কারটি প্রদান করা হয়।

আজ থেকে ১২২ বছর আগে ১৯০১ সালে এবং এরং এর ৬৮ বছর পর ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পুরস্কার প্রদান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার বিজয়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৬২৭টি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯৬৫ ব্যক্তি ও ২৭ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাঁচ ব্যক্তি ও দুটি সংস্থা একাধিকবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছে।

একমাত্র আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি সর্বোচ্চ তিনবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। ১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সালে প্রতিবারই শান্তিতে নোবেল পেয়েছে সংস্থাটি।

প্রদত্ত মেডেলের সম্মুখ দিকে থাকে আলফ্রেড নোবেলের খোদিত ছবি, যা পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বা সাহিত্যের জন্য প্রদত্ত মেডেলের মতোই। তবে অন্য পাশটা আলাদা। সেই পাশে মেধাবী এক চিকিৎসকের প্রতিকৃতি দেখা যায়, যে নিজের কোলে রাখা একটি উন্মুক্ত বই ধরে আছে এবং একই সঙ্গে পাথরের বুক চিরে প্রবহমান পানি দিয়ে একটি মেয়ের তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছে।

১৯১৫-১৯১৮, ১৯২১, ১৯২৫, ১৯৪০-১৯৪২ মোট ৯ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়নি। অধিকাংশ বছরই দেওয়া হয়নি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে।

১৯৩৯ সালে অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ এডলফ হিটলার গারহার্ড ডোমাগ নামের চিকিৎসাবিজ্ঞানীকে তার প্রাপ্য নোবেল পুরস্কার গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেন। পরে তিনি অবশ্য তার প্রাপ্য ডিপ্লোমা ও পদক গ্রহণ করেন, কিন্তু অর্থ ফিরে পাননি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন