ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আদানি পাওয়ার প্ল্যান্টের সাথে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি কেন পুনর্বিবেচনা নয় জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট আফরোজা ফিরোজ মিতা ও ব্যারিস্টার কামারুন মাহমুদ মিতা।
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সব চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অনুসন্ধান কমিটিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ রাখতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এক মাসের মধ্যে কমিটি গঠন করে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে অসম চুক্তি বাতিল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
এছাড়া ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তির সময় যে দর কষাকষি হয়েছিল, তার নথি এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলেছেন আদালত।
যা আছে রিটে
নোটিশে অবিলম্বে অন্যায্য একতরফা চুক্তি পুনর্বিবেচনা অথবা পুরোটাই বাতিল চাওয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে আদানিকে এই ঘটনায় চুক্তি পুনর্বিবেচনার কার্যক্রম শুরু না করলে হাইকোর্টে রিট করবেন বলেও জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়ার জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশের জবাব দিতে পিডিবির চেয়ারম্যান ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ৩ তিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়। নোটিশের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় এ রিট আবেদনটি করা হয়েছে।
আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি
বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনায় আদানির সঙ্গে তাড়াহুড়া করে ২০১৭ সালে ক্রয় চুক্তি হয়। ওই সময় দেশে আমদানি করা কয়লানির্ভর কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়নি। এসব চুক্তির একটি ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে করা ২৫ বছর মেয়াদি ক্রয় চুক্তি। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র থেকে মূলত বাংলাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির সভায় ১১টি কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত ও নথি কমিটিকে সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র।
দেখুন: ‘আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি দেশবিরোধী’