ঢাকা হবে সব মানুষের। মানবিক, পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ আর আনন্দময় এক শহর হয়ে উঠবে রাজধানী। মানুষও দেখছিলো এবং বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলো হাজারো সমস্যায় জর্জরিত শহরটি বদলে যাচ্ছে। যান্ত্রিকতাকে মায়ায় আর দু:খকে স্বপ্নের বাহুডোরে বেঁধে তার বাস্তব রুপও দিয়েছিলেন। কিন্তু, দু’বছর না ঘুরতেই, নগর ছাড়লেন আনিসুল হক। চলে গেলেন অন্য ভূবনে, এক পরিচ্ছন্ন-বাসযোগ্য নগরীতে।
মসনদে বসলে, ওয়াদা ভুলে যান অনেকে। কিন্তু, আনিসুল হক প্রমাণ করতে শুরু করেছিলেন, ভুলে যাওয়ার মতো মানুষ নন তিনি। বিশাল স্বপ্ন! প্রজ্ঞা, মেধা আর যোগ্যতা দিয়ে, নেমে পড়েছিলেন কাজে। শপথ নেন একটি স্মার্ট নগরী গড়ার ।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র হন ২০১৫ সালে। মানুষ এখন বলে ফেরে, ৪০০ বছরের এই শহর এমন এক নগরপিতাকে পেয়েছিলো, যিনি হয়ে উঠেছিলেন গণমানুষের একজন।
প্রশস্ত ফুটপাথ, খেলার মাঠ, পাবলিক টয়লেট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সবখানেই এনেছিলেন চোখ ধাঁধানো পরিবর্তন। মেয়র আনিসুল হক বলতেন, ঘুম ভেঙ্গে মানুষ যেন একটা পরিচ্ছন্ন শহর দেখতে পায়। তাই, বাড়িয়েছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও তাদের বেতনভাটা।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ভাষ্যে, বনানী, গুলশান, উত্তরা, মিরপুর। কোথায় নেই তার ছাপ! নগর দর্শনের বহুমাত্রিকতায় মুগ্ধ এই ফুটপাতে আজও শোনা যায় তার চলে যাওয়ার আকুতি।
আনিসুল হকের পরিচ্ছন্ন নগরের স্বপ্ন কতদূর!
মেয়র আনিসুল হক আজ নেই, ফুটপাত উদ্ধারের সে বিশাল কর্মযজ্ঞও নেই। ফুটপাত আজওঁ চলে গেছে কারো না কারো দখলে।
নগরের দুঃখ গুছাতে,হাতে নিয়েছিলেন সুবজ ঢাকা প্রকল্প। তবে আজ তিনি নেই, নগরেও নেই সবুজের সমারহ। তার করা ১০০টি আধুনিক গণশৌচাগার পরে আছে জরাজীর্ণ হয়ে।
তবে কেউ কেউ আবার মনে প্রাণে মেয়র আনিসুল হকের স্বপ্ন ধারণ করে যাচ্ছেন।
মানুষের চাপাকষ্টে সমাধান হয়ে এলেন ঠিকই, কিন্তু স্বপ্নের এ কর্মযজ্ঞ শেষ না করেই পাড়ি দিলেন মহাকালের যাত্রায়।
ব্যাক্তি আনিসুল হক আজ নেই। আর আসবেনও না। কিন্তু রয়ে গেছে তার কর্ম। গেয়ে যায় তারই জয়গান। যে গানে আজও মুক্তির পথ খোঁজে অনুরাগীরা। তিনি বেঁচে আছেন,থাকবেন অন্তরে অন্তরে নীরবে নিভৃতে!
আজী/
দেখুন: সমাধান যাত্রার আনিসুল হক