19 C
Dhaka
শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

এনআইডি সেবা নিয়ে এখনো কেন স্বরাষ্ট্র-ইসি রশি টানাটানি?

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি। যদিও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই বিষয়ে আইন প্রণয়ন এবং রুলস অব বিজনেস সংশোধন করা হয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে এই সেবা পরিচালনার জন্য একটি আলাদা অনুবিভাগও প্রতিষ্ঠিত করা হয়, তবে এখনো বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। 

নির্বাচন কমিশন নতুন আইন বাতিল করে এনআইডি সেবা তাদের কাছে রাখার পক্ষে অবিচল রয়েছে, এবং এ কারণে কমিশনের সচিব রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। অপরদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের অবস্থান সমর্থনে যুক্তি প্রদান করছে, কেন এই সেবা তাদের কাছে থাকা উচিত।

সুরক্ষা সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনআইডি সেবাগ্রহীতাদের যাতায়াত এবং সেবায় অনিয়ম-দুর্নীতি কমাতে এবং সেবাটিকে একটি সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার উদ্দেশ্যে পূর্ববর্তী সরকার এই সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনতে চেয়েছিল। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও সরকার এখনও আইন বাস্তবায়ন করেনি, ফলে এনআইডি সেবা এখনও নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তই শেষ কথা হবে। এদিকে, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে তারা এনআইডি সেবা প্রদান করে আসছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও জনবল রয়েছে। তাই তারা মনে করেন, এই সেবা কমিশনের অধীনে রাখা অধিক যুক্তিযুক্ত। এজন্য তারা সরকারের শীর্ষ মহলে আইনটি বাতিল করার জন্যও জানিয়ে দিয়েছেন।

সুরক্ষা সেবা বিভাগ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের যুগ্ম-সচিব ফারুক আহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বলার মতো কিছু নেই। এখানে এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। এটা সরকারের পলিসি ডিসিশন। বলা আছে, হস্তান্তরের আগে এনআইডি সেবা যেভাবে চলছে সেভাবেই চলতে থাকবে। সেভাবেই চলছে। এখন নতুন সরকার যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তখন হয়তো সেই অনুযায়ী চলবে।’

সুরক্ষা সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র এখন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হয়ে গেছে যে, প্রত‌্যেকটি সেবার ক্ষেত্রে এটি লাগে। কিন্তু এনআইডির ভুল-ত্রুটি সংশোধন, হারিয়ে গেলে নতুন করে নেওয়াসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের সেবা নিতে জনগণকে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেবা পাওয়ার ভোগান্তি ছাড়াও এনআইডি নিয়ে নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির কথাও নিয়মিত শোনা যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এটি স্বরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

বলার মতো কিছু নেই। এখানে এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। এটা সরকারের পলিসি ডিসিশন। বলা আছে, হস্তান্তরের আগে এনআইডি সেবা যেভাবে চলছে সেভাবেই চলতে থাকবে। সেভাবেই চলছে। এখন নতুন সরকার যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তখন হয়তো সেই অনুযায়ী চলবে।- যুগ্ম-সচিব ফারুক আহাম্মদ

সুরক্ষা সেবা বিভাগের হাতে এ সেবা হস্তান্তর করা হলে তখন আইন অনুযায়ী সব কার্যক্রম সম্পন্নের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

তারা আরো বলেছেন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে পাসপোর্টের বিশাল ডাটাবেজ আছে। সব ধরনের ভেরিফিকেশনের কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করে, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। এনআইডির ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশনটা আরও জরুরি। সেই হিসেবে এনআইডি সেবাও স্বরাষ্ট্রের অধীনে থাকাটাই যৌক্তিক, এজন‌্যই আইন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রের দুই বিভাগও এক হয়ে যাচ্ছে।

এনআইডি নিজেদের কাছে রাখতে অনড় ইসি

এনআইডি সেবা সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে হস্তান্তরে সমন্বয়ের কাজ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিধি অনুবিভাগ। ২০২১ ও ২০২২ সালে যখন প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছিল তখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিধি অনুবিভাগের যুগ্ম-সচিব ছিলেন বর্তমান ইসি সচিব শফিউল আজিম। পরে তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে থাকা অবস্থায়ই অতিরিক্ত সচিব হন।

নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের আগে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সুরক্ষা সেবা বিভাগের কর্মকর্তারাও আমাদের এখানে এসেছিলেন। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়, ফিজিবিলিটি নিয়ে কথা হয়। বাস্তবতার ভিত্তিতে কী করা যায়- সেটা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে এটি এখন সরকারের পলিসি ম্যাটার (নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত)। আইনটা তো এখনো সক্রিয় হয়নি। তাই সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’

আগের কমিশনের অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘আমরা যে চিঠি পাঠিয়েছি, সেখানে যুক্তি দিয়েছি, বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের যে অবকাঠামো আছে, প্রশিক্ষিত জনবল আছে, ভোটার তালিকার সঙ্গে এটার একটা সম্পর্ক আছে। এ কাজ কেন্দ্র করে আমাদের বিভিন্ন স্ট‌্যাবলিশমেন্টও হয়ে গেছে। এটা এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকাটা যৌক্তিক, এটা আমরা বলেছি চিঠিতে। এটাই নির্বাচন কমিশনের অবস্থান। বিভিন্ন ধরনের মতামত আসবে, চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই নেবে।’

তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের সময়ে আইনটি হলেও তারা তো সেটা বাস্তবায়ন করেনি। তারা সন্তুষ্ট ছিল না যে এটা এখনই কার্যকর করা যায়। এখনো যথেষ্ট যাচাই-বাছাই করার সুযোগ আছে।’

ভোগান্তি-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে শফিউল আজিম বলেন, অনিয়ম ও ভোগান্তির বিষয়ে তো উন্নতি করার সুযোগ আছে। আমরা অনিয়ম দূর করা, রোহিঙ্গারা যেন এনআইডি নিতে না পারে, সেবা সহজ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটার আলোকে আমরা প্রতিদিনই কাজ করছি। দুর্নীতির অভিযোগ থাকে, সেটা আমরা অ‌্যাড্রেস করার চেষ্টা করছি। দুর্নীতি কমাতে কাজ করছি।

‘অনেক ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছিল, তাই রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মহোদয়কে চিঠি দিয়েছি। এখন আমাদের ফুল কমিশন চলে এসেছে, কমিশনকে ব্রিফ করবো। এরপর হয়তো পলিসি লেভেলে সিদ্ধান্ত হবে।’ বলেন ইসি সচিব।

নতুন আইন

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’ এর গেজেট জারি হয়। ২০১০ সালের আইন সংশোধন করে এ আইন করা হয়।

আগের সরকারের সময়ে আইনটি হলেও তারা তো সেটা বাস্তবায়ন করেনি। তারা সন্তুষ্ট ছিল না যে এটা এখনই কার্যকর করা যায়। এখনো যথেষ্ট যাচাই-বাছাই করার সুযোগ আছে।- নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিম

আইনে বলা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে একজন নিবন্ধক থাকবে। নিবন্ধক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা, পরিচয়পত্র প্রস্তুতকরণ, বিতরণ ও রক্ষণাবেক্ষণসহ আনুষঙ্গিক সব দায়িত্ব পালন করবেন। নিবন্ধকের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকবে। সরকার নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করতে পারবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির জন্য প্রত্যেক নাগরিককে পরিচয় নিবন্ধন করতে হবে। পরিচয় নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধকের কাছে আবেদন করতে হবে। একজন নাগরিককে নিবন্ধক কেবল একটি জাতীয় পরিচিতি নম্বর দেবেন, যা ওই নাগরিকের একক পরিচিতি নম্বর (ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) হিসেবে সব জায়গায় ব্যবহৃত হবে। জাতীয় পরিচিতি নম্বরের ভিত্তিতে একজন নাগরিককে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে বলে আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী নিবন্ধক প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দেবেন। এজন‌্য নিবন্ধকের কার্যালয়ের অধীন একটি সেল থাকবে। এ সেলে নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী দায়িত্ব পালন করবেন।

এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে নিবন্ধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, সমন্বয় ও পরিবীক্ষণে একটি সমন্বয় কমিটি থাকবে। সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব এ কমিটির সভাপতি হবেন।

এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিলের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে আইনে। আইনে এনআইডি সংক্রান্ত অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ একলাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

ইসি সচিবের চিঠি

গত ১০ সেপ্টেম্বর এনআইডি সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’ বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে আধা-সরকারি পত্র (ডিও লেটার) পাঠান ইসি সচিব শফিউল আজিম।

চিঠিতে বলা হয়, সবশেষ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুসারে ইসির ডাটাবেজে প্রায় ১২ কোটি ১৯ লাখ নাগরিকের তথ্য রয়েছে। ইউএনডিপির সমীক্ষা অনুসারে ভোটারদের এই সংগৃহীত ডাটা ৯৯ দশমিক ৭ শতাংশ সঠিক বলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ব্যতিরেকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০ অনুসারে ইসির একই জনবল দিয়ে বিগত ১৭ বছর ধরে নিবন্ধিত নাগরিককে এনআইডি সেবা দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশব্যাপী ইসির নিজস্ব অবকাঠামো এবং প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরি হয়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, তৎকালীন সরকার সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্যসমৃদ্ধ জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংক্রান্ত কার্যক্রম ইসির পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যস্তকরণের সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া রুলস অব বিজনেস ভঙ্গ করে সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্তকরণ করে বিগত সরকার। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগের মতামত নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়েই ইসির মতামত নেয়া হয়নি।

এ আইন কার্যকর হলে ভোটার তালিকা প্রণয়নে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে। তথ্যের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন নিবন্ধকের ওপর নির্ভর করতে হবে, যা সংবিধানে প্রদত্ত নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন অস্তিত্বের পরিপন্থী বলে জানানো হয় চিঠিতে।

এতে আরো বলা হয়, এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলে ভোটার তালিকার তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের অমিলের কারণে ভোট দেওয়া বাধাগ্রস্ত হবে এবং নির্বাচন পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটবে। এছাড়া, তথ্যভাণ্ডারের শুদ্ধতা বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

জাতীয় স্বার্থে অমূল্য এ তথ্যভাণ্ডারকে সুসংহত রেখে অব্যাহত নাগরিক সেবা নিশ্চিতকল্পে নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্তকরণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’ বাতিলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে চিঠিতে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে সিনিয়র সচিবের সুদৃষ্টি কামনা করেন ইসি সচিব।

উদ্যোগ শুরু ২০২১ সালে

২০২১ সালের ১৭ মে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম ইসির পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ পর ২৪ মে ইসি সচিব ও সুরক্ষা সেবা বিভাগ সচিবের কাছে চিঠি পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

একই বছরের ৮ জুন জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম নিজেদের কাছে রাখার বিষয়ে অবস্থান তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয় ইসি।

ইসির সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২০ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে আরেকটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাঠানো পত্রের আলোকে সরকার জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম আইনানুগভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমতাবস্থায়, নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

পরে এ বিষয়ে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কোন প্রক্রিয়ায় এনআইডি সেবা সুরক্ষা বিভাগের কাছে হস্তান্তরিত হবে সে বিষয়ে সুপারিশ দেয় কমিটি।

পরে আইনের খসড়া করে সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এনআইডি কার্যক্রম নিজেদের কাছে নিতে একটি কারিগরি (টেকনিক্যাল) কমিটিও গঠন করে সুরক্ষা বিভাগ।

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের ‘রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬’-এ সংশোধন আনা হয়। রুলস অব বিজনেসের মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যাবলী অংশে (সিডিউল-২) নতুন একটি কার্যক্রম যুক্ত করা হয়।

এরপর প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের পর সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে গঠিত হয় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন