জাতীয় সংসদে ৫৩তম বাজেট পেশ করেছেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন তিনি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ করা হয় ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এখাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে ৪৫০২ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট বাজেটের ১৩.২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হলেও এবার এখাতে ১১.৪ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ১০৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চলতি বাজেটে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এখাতে বরাদ্দ একটু বাড়তে পারে। তবে এবার বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য ২৯ হাজার ২৩০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৩৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এরই মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট, যা বর্তমানে ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও ব্যবহার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন তিনি।
জ্বালানি খাতে অগ্রগতির কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমাদের গ্যাসের উৎপাদন ছিল দৈনিক ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি দৈনিক প্রায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট আমদানিকৃত এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি হতে জানুয়ারি ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে।
এদিকে দেশজুড়ে গ্যাস সংকট সমাধানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় বরাদ্দের প্রত্যাশা করেছিলেন শিল্পোদ্যোক্তা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের মতোই কম বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে খাতটি।