এমপি আনারকে খুন করতে, ভাড়া করা হয় খুলনার কুখ্যাত সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়াকে। তিনি পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা। ঢাকায় ধরা পড়ার পর, নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে। এই নামেই তিনি তৈরি করেন পাসপোর্ট ও এনআইডি। কীভাবে তিনি এতোসব করলেন, সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা শিমুল ভূঁইয়া। খুলনা অঞ্চলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী। ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনার পর জানা গেলো, এই শিমুল ভূঁইয়াই সৈয়দ আমানুল্লাহ। যাকে এমপি আনারকে খুনের জন্য ভাড়া করা হয়।
শিমুল ভূঁইয়া পরিচয় গোপন করে সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পাসপোর্ট করেন তিনি। জাতীয় পরিচয়পত্রও এই একই নামে। এই পাসপোর্টেই ভারতে যান, ফিরেও আসেন।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে আমানুল্লাহ নামে পাসপোর্টটি করা হয়েছিল। কীভাবে তিনি শিমুল ভূঁইয়া থেকে আমানুল্লাহ হলেন এবং ভুয়া পাসপোর্ট ও এনআইডি তৈরি করলেন, এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতার নিউ টাউনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করে ১৫ মে দেশে ফেরেন আমানুল্লাহ পরিচয় দেয়া শিমুল ভূঁইয়া। পরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন। খুনের জন্য এমপি আনারের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহিনের সঙ্গে তার চুক্তি হয়। আনোয়ারুলের সঙ্গে আক্তারুজ্জামানের সোনা চোরাচালান ও হুন্ডির ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথ্য পাচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, শিমুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে খুনসহ অন্তত দুই ডজন মামলা আছে। ইমান আলী নামের এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন তিনি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও অন্যান্য সূত্র বলছে, এমপি আনোয়ারুল আজীমকে খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সৈয়দ আমানুল্লাহ নামে পরিচয় দানকারী শিমুল ভূঁইয়া। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার ফুলতলার দামোদর ইউনিয়নে।
শিমুল ভূঁইয়া এখনো খুলনার অপরাধজগতে আতঙ্কের নাম। তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য। শিমুলের ভাই শরীফ মোহাম্মদ ভূঁইয়া শিপলু দামোদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। শিমুল গ্রেপ্তার হওয়ার পর, গা ঢাকা দিয়েছে তার আত্মীয় স্বজনরা।