16 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

কম বয়সীদের ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা ৮০ শতাংশ বেড়েছে!

‘ক্যানসার’- অসংক্রামক যত ব্যাধি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন রোগ, এককথায় মরণব্যাধি। বর্তমান সময়ে ক্যানসারের চিকিৎসা বেশ এগিয়েছে। তারপরও বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। আর এই সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে।

কিন্তু এই বৃদ্ধি যে আসলে কতটা ভয়ানক, তা সা¤প্রতিক বড় পরিসরের এক সমীক্ষায় স্পষ্ট হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা গেøাবাল বার্ডেন অব ডিজিজ-২০১৯ স্টাডির এক রিপোর্টের আদ্যপান্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যে তথ্য জানা যাচ্ছে, তা রীতিমতো আতঙ্ক জাগানোর মতো।

প্রতিবেদন অনুযায়ি, গত ১০ বছরে ২৪টি দেশে ২৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে কলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়তে দেখা গেছে। এসব দেশের মধ্যে আছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নরওয়ে ও আর্জেন্টিনা।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জেনেভায় ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোলের (ইউআইসিসি) এক সম্মেলনে, আন্তর্জাতিক গবেষক দল উদ্বেগজনক এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি (এসিএস) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার গবেষণাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষকরা, অকালে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বোঝার জন্য ৫০টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করেছে। এতে দেখা গেছে, ১৪ দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শুধু তরুণদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এসব দেশে অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সী মানুষের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা স্থিতিশীল।

আরেক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৪ থেকে ৪৯ বছর বয়সের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ দশমিক ৮২ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ২৬ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। ২০৪টি দেশের ২৯ ধরনের ক্যানসার রোগীদের উপরে করা হয়েছে এ সমীক্ষা।

চীনের ঝেইজিয়াং ইউনিভার্সিটি অব মেডিসিনের উদ্যোগে করা এ স্টাডির রিপোর্ট সবাইকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। বিখ্যাত বিএমজে মেডিকেল জার্নালে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। যা অনুযায়ি গত ৩০ বছরে পঞ্চাশের চেয়ে কম বয়সীদের ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা ৮০ শতাংশ বেড়েছে।

তবে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিস্তারিত গবেষণা শুধু ভয় নয়, আশাও জাগাচ্ছে। কারণ, এ থেকে এই ভয়াল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে মিলছে সংকট মোকাবিলার দিক নির্দেশনাও। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্টাডি যে শিক্ষাটি প্রথমে দেয় তা হলো, ক্যানসারের দ্রæত ও প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিকভাবে নির্ণয়ের প্রয়োজনীয়তা।

আর এ নির্ণয়টি করতে হবে দুটি বিষয়ে। একটি হচ্ছে ক্যানসার হয়েছে কি না বা হলে তা কী ধরনের ক্যানসার, আর অন্যটি হলো এটি কোন পর্যায়ে আছে। এ ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করা গেলেই কেবল সঠিকভাবে টার্গেট অনুযায়ী এর চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো ক্যানসার হওয়ার আগেই একে প্রতিরোধ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। আর এই চেষ্টার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো, তরুণ প্রজন্মের জীবনযাপনে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা। যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস, মদ ও ধূমপান থেকে দূরে থাকা আর শারীরিকভাবে সচল থাকা অর্থাৎ ব্যায়াম করা।

সা¤প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ বছর থেকে ৪৫ বছর বয়সী মানুষের শরীরের অতিরিক্ত ওজনের কারণে ১৮ ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে। ল্যানসেটের প্রতিবেদনে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের মধ্যে যে ১৭ ধরনের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে, তার ১০টিই স্থূলতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মধ্যে আছে কিডনি, ডিম্বাশয়, যকৃৎ, অগ্ন্যাশয় আর পিত্তথলির ক্যানসার।

এই বয়স গ্রæপে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে স্তনের ক্যানসার। এছাড়া নাসাগলবিল, ন্যাসোফ্যারিংস আর প্রস্টেট ক্যানসারও বেড়েছে দাবানলের মতো। আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে, লিভার ক্যানসার একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে নির্ণয় করা হচ্ছে, তাই মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।

ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, লিভার ক্যানসারের রোগীদের বেশিরভাগের আগে থেকেই হেপাটাইটিস-বি বা অন্য কোনো লিভারের রোগ থাকে। আবার নাক ও গলার মাঝের নল বা ন্যাসোফ্যারিংসের ক্যানসারের ক্ষেত্রে একধরনের ভাইরাসের ভূমিকা থেকে যাচ্ছে, যার আবার কোনো প্রতিষেধক নেই। আবার ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, পরিবারের ইতিহাসে ক্যানসার হওয়ার রেকর্ডও পাওয়া যাচ্ছে।

তারপরও বলা হচ্ছে, জেনেটিক কারণ থাকলেও জীবনযাপনের ইতিবাচক পরিবর্তন এনে তা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। অতিরিক্ত লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাতকৃত ও জাংক ফুড, অতিরিক্ত সাদা লবণ ও চিনিগ্রহণ, দুধ জাতীয় ও ফল, সবজি না খাওয়াসহ নানা ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস পাওয়া যাচ্ছে কমবয়সী ক্যানসার রোগীদের ক্ষেত্রে। এছাড়াও ব্যায়ামের অভাব, বায়ুদূষণ, অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস ইত্যাদিও প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

ক্যান্সার কি?
আমাদের শরীর হলো অসংখ্য দেহকোষের সমষ্টি। শরীরের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী কোষগুলো সৃষ্টি হয়, বৃদ্ধি পায় এবং পরিণত অবস্থায় যাওয়ার পর যথা নিয়মে ধ্বংস হয়ে যায়। নতুন কোষ এই ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোষগুলোকে পুনরায় প্রতিস্থাপিত করে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে শরীরে জিনগত পরিবর্তন দেখা দেয়, যার ফলে দেহের ওই সুনির্দিষ্ট নিয়ম ব্যাহত হয়। এসময় পরিণত কোষগুলো ধ্বংস না হয়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে দ্রæত হারে বৃদ্ধি পায়। যার ফলে শরীরে অসংখ্য অস্বাভাবিক কোষের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থাকেই সাধারণত ক্যান্সার বলা হয়।

এই অতিরিক্ত অস্বাভাবিক কোষগুলি একত্রিত হয়ে এক ধরণের পিন্ড তৈরি করে, যা সাধারণভাবে টিউমার নামে পরিচিত। এই টিউমার থেকেই সাধারণত শরীরে ক্যান্সারের সূত্রপাত হয়।

ক্যান্সার কেন হয়?
ক্যান্সার শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ব্যাপক। এর দ্বারা প্রকৃতপক্ষে ১০০ রকম রোগ বোঝানো হয়। এই রোগগুলো শরীরের যেকোনো অংশেই আক্রমণ করতে পারে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা বিপজ্জনক, এমনকি প্রাণঘাতী হয়।

জৈবিক বা আভ্যন্তরীণ কারণ
সাধারনত জিনগত অস্বাভাবিকতা এবং জিনের নানারকম ক্ষতির কারণে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব হয়। এছাড়াও ক্যান্সার সৃষ্টিকারী নানারকম ক্ষতিকর পদার্থের সংস্পর্শে আসার ফলেও ক্যান্সার হতে পারে। ক্যান্সারের উল্লেখযোগ্য কারণগুলি হলো-

বয়স: যদিও যেকোনো বয়সেই ক্যান্সার হতে পারে, তাও সাধারণত বয়সকে ক্যান্সারের একটি প্রাথমিক শর্ত বলে মনে করা হয়। এর কারণ হল বেশিরভাগ ক্যান্সারের ঘটনাই বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেখা যায়। ১০ জনের মধ্যে ৯ জন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরই বয়স ৫০ বা তার উর্ধ্বে।

লিঙ্গ: সাধারনত নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
জিনগত ত্রুটি: লি-ফ্রাউমেনি সিনড্রোম থেকে হাড়ের ক্যান্সার, ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সার, সফ্ট টিস্যু সারকোমা, মস্তিষ্কের ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, ডাউন সিনড্রোম নামক জিনগত অসুখ থেকেও নানারকম ক্যান্সার, যেমন লিউকিমিয়া বা বøাড ক্যান্সার এবং টেষ্টিকুলার ক্যান্সার হতে পারে।

ইউ ভি রশ্মির বিকিরণ: সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি বা ইউ ভি রশ্মির সংস্পর্শে দীর্ঘকাল থাকলে, মেলানোমা ও অন্যান্য নানা ধরণের ত্বকের ক্যান্সার হতে পারে।

রেডিয়েশন থেরাপি: ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেডিয়েশন থেরাপির সংস্পর্শে আসার ফলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অন্য ধরণের ক্যান্সার হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়- ধরা যাক কোনো ব্যক্তির লিম্ফোমা নামক ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বুকে রেডিয়েশন থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। এর থেকে পরবর্তীতে ওই ব্যক্তির ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তনগ্রন্থির ক্যান্সার হতে পারে।

পেশাগত পরিবেশের কারণে সৃষ্ট ক্যান্সার: পেশার সূত্রে নানা ধরণের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে দীর্ঘদিন থাকলে, দেহের সাধারণ ডি এন এ-র গঠনে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে, যার থেকে ক্যানসার হবার সম্ভাবনা থাকে। কিছু ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ যেমন রেডিয়াম, অ্যাসবেস্টসের গুঁড়ো, টার বা আলকাতরা ইত্যাদির সংস্পর্শে থাকাও ক্যান্সারের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।

জীবনযাপনের তারতম্যের ফলে সৃষ্ট ক্যান্সার: অতিরিক্ত ধূমপান থেকে নানা ধরণের ক্যান্সার হয়, যেমন ফুসফুস, ল্যারিংক্স বা স্বরযন্ত্র, মাথা, গলা ও ঘাড়, পাকস্থলী, বøাডার বা মূত্রথলি, কিডনি, অগ্ন্যাশয় এবং ইসোফগাস বা খাদ্যনালীর ক্যান্সার ইত্যাদি।

অত্যধিক মদ্যপানও ক্যান্সারের একটি অন্যতম কারণ: কিছু কিছু খাবার থেকেও ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা থাকে। যেমন বারবিকিউ বা ঝলসানো মাংসে প্রচুর পরিমাণ ক্ষতিকর নাইট্রাইট ও পলি অ্যারোম্যাটিক পদার্থ থাকে, যা থেকে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের ফলে সৃষ্ট ক্যান্সার: হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস-এর থেকে সারভাইকাল ক্যানসার হতে পারে। এপস্টাইন-বার ভাইরাস থেকে বার্কিট লিম্ফোমা নামক ক্যান্সার হয়। এইচ পাইলোরি ভাইরাসের জন্য পাকস্থলীতে ক্যান্সার হতে পারে।

হেপাটাইটিস ভাইরাস থেকে লিভার ক্যান্সার হতে পারে: হরমোনের পরিবর্তন ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ফলেও ক্যান্সার হতে পারে। দেহে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রার তারতম্যের ফলে সাধারণত ইউটেরাসের ক্যান্সার হয়ে থাকে।

ক্যান্সারের চিকিৎসা!
আপাতদৃষ্টিতে বিপজ্জনক মনে হলেও, বর্তমানে ক্যান্সারের বিভিন্ন রকম উন্নত ও অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। তবে কোন রোগীর ক্ষেত্রে কী ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত সাধারণত ক্যান্সারের অবস্থান, প্রকৃতি বা কোন ধরণের ক্যান্সার, এবং ক্যান্সারের বর্তমান অবস্থা অর্থাৎ ক্যান্সার কোন স্টেজে রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে। শরীরে ক্যান্সার কতখানি ছড়িয়ে পড়েছে তার ওপর ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতি নিরূপণ অনেকাংশে নির্ভর করে।

সাধারনত বেশিরভাগ ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্যই চিকিৎসকেরা সার্জারি বা অপারেশনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ক্যান্সার যদি প্রাথমিক অবস্থায় থাকে, অর্থাৎ বেশি দূর ছড়িয়ে না পড়ে থাকে, তবে সার্জারি সাধারনত বিশেষভাবে কার্যকরী হয়। সার্জারি ছাড়াও কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি ইত্যাদিও ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কার্যকরী হয়।

বর্তমানে অনেক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অর্থাৎ অঙ্কোলজিস্টরা নানা রকম অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যেমন হরমোন থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, টার্গেটেড ড্রাগ থেরাপি ইত্যাদির সুপারিশ করে থাকেন। এছাড়াও বোন ম্যারো বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনকে কিছু কিছু ক্যান্সারের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি হিসেবে গণ্য করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন