25 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

কলকাতায় মিথিলার ‘ও অভাগী’ কেমন হলো

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্ভবত সেই বিরল বাঙালি লেখক, যাঁর একাধিক লেখা থেকে অনেক ছবি হয়েছে; এবং সে সব ছবি শুধু বাংলা বা হিন্দি ভাষাতেই আটকে থাকেনি, ছড়িয়ে পড়েছে নানা ভাষায়, নানা প্রদেশেও। অনিবার্য ভাবে ‘দেবদাস’-এর নাম এ প্রসঙ্গে সবার আগে আসবে। সম্প্রতি অনির্বাণ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘ও অভাগী’ দেখতে গিয়ে এ কথাটাই বার বার মনে পড়ছিল। ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পটি আমাদের স্কুলপাঠ্য ছিল। কোন প্রাসঙ্গিকতায় এত দিন পরও কয়েক পাতার সে গল্পকে প্রায় দু’ঘণ্টার সিনেমায় ধরলেন পরিচালক? কেন ধরলেন?

তরুণ পরিচালকের থেকে জানা গেল গল্পে অনেক সংযোজন করেছেন তিনি। শরৎচন্দ্রের অভাগীর করুণ মৃত্যুর বদলে গোটা সমাজব্যবস্থার করুণ চেহারাটাকেই তুলে ধরেছেন পরিচালক। তাই এটি আর শুধু শরতের অভাগী থাকেনি, হয়ে উঠেছে তাঁর অভাগীও। সময়কাল বদলে, তাই ছবির সময়কাল সাতের দশকে এনে ফেলেছেন পরিচালক। জমিদারের বদলে নেতা-বিধায়কদের দুর্নীতি থেকে শুরু করে হাজার হাজার অভাগীর মতো প্রান্তিক নারীদের আজও ন্যূনতম চাহিদার বিনিময়ে শোষণ করা সমাজের নানা চরিত্রদের মুখ যোগ করেছেন পরিচালক। সেখানে যেমন আছে জমিদারের শাগরেদরা, আছে পাড়া-প্রতিবেশী, চরিত্রহীন গায়েন ও তার একাধিক স্ত্রী-সহ অসংখ্য চরিত্র। আর আছে, এ ছবির প্রধান চরিত্র মৃত্যু, যার সঙ্গে বার বার যমরাজের ছদ্মবেশে দেখা হয়ে যায় অভাগীর। ছবির প্রথম দৃশ্য থেকেই ‘মৃত্যু’ই একমাত্র কামনা অভাগীর, ‘মৃত্যু’ই তাঁর ছায়াসঙ্গী, সহচরী, ‘মেঘে ঢাকা তারা’র নীতার মতোই ‘মৃত্যু’র সঙ্গেই গোটা ছবি জুড়ে দাবা খেলে যায় সে।

ছবির প্রথমার্ধ জুড়ে এই সব চরিত্রদের ঘিরেই গল্প এগোতে থাকে। দ্বিতীয়ার্ধে বস্তুত শরৎচন্দ্রের মূল গল্প অর্থাৎ অভাগীর মারা যাওয়া ও তার চিতার কাঠ কাটাকে ঘিরে ঘটনা ডালপালা মেলে।

অভাগীর স্বামীর কথা মূল গল্পে যতটা আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি এ ছবিতে। লম্পট চরিত্রের সেই গায়েনকে কি আর একটু কমিয়ে আনা যেত? তার বদলে কি অভাগীর মারা যাওয়ার পর তার শিশুটির অসহায়তাকে আর একটু বেশি দেখানো যেত? ছবিটি দেখতে দেখতে এমন প্রশ্ন জাগতে পারে।

গত ৩১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পেয়েছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্প অবলম্বনে সিনেমা ‘ও অভাগী’। কলকাতার এ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন