কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী-নির্বাচিত হয়েছেন মার্কি কার্নি, ফলে দেশটিতে জাস্টিন ট্রুডো অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। রোববার (৯ মার্চ) রাতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি তাকে দলের নতুন নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে, যা অনুযায়ী তিনি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পদেও দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এই নির্বাচন এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে।
মার্ক কার্নি, যিনি আগে ব্যাংক অব গভর্নর ছিলেন এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। দলের নেতৃত্বের জন্য মোট চারজন প্রার্থী লড়েছিলেন এবং মার্ক কার্নি তাদের মধ্যে নির্বাচিত হন। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নির্বাচনের পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “কানাডিয়ান পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে বিবেচনা করি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এই (বাণিজ্য) লড়াই চাইনি, কিন্তু কানাডিয়ানরা সবসময় প্রস্তুত থাকে যখন কেউ তার হাতের গ্লাভস ফেলে দেয়। তাই মার্কিনিদের, কোনো ভুল করা উচিত নয়। হকি খেলার মতো বাণিজ্য লড়াইয়েও কানাডা জিতবে।”

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৯ সালে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অভিহিত করে কটাক্ষ করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর ট্রুডো’ হিসেবে ডেকেছিলেন।
তবে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী-নির্বাচিত মার্ক কার্নি একে পাল্টা জবাব দেন। তিনি বলেন, “আমেরিকা নয়, এবং কখনো, কোনোদিন কোনোভাবে আমেরিকার অংশ হবে না।”
এদিকে, মার্ক কার্নির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই গভর্নর জেনারেল শপথ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। এবিসি নিউজ জানিয়েছে, তিনি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কানাডার গভর্নর জেনারেলের কাছে শপথ গ্রহণ করবেন। গভর্নর জেনারেল, যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। কার্নি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর, তিনি এপ্রিলের শেষের দিকে নতুন সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন।
জাস্টিন ট্রুডো, যিনি ২০১৫ সালে প্রথম কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন, সম্প্রতি তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ার কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন। ৬ জানুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব ও দলীয় প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার পদত্যাগের ঘোষণার পর থেকেই র রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন নেতৃত্বের আশাবাদ জাগে, এবং সেই নেতৃত্বে উঠে আসেন মার্ক কার্নি।
এছাড়া, ট্রুডোর পদত্যাগের পর এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তন হতে চলেছে, কারণ নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি শুধু দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন না, বরং বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে কৌশলগত ভূমিকা পালন করবেন। এই নতুন নেতৃত্বঅর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পড়ুন: রাজনীতি থেকে বিদায় নিচ্ছেন জাস্টিন ট্রুডো
দেখুন: এক লটারি জিতেই ৩৮৪ কোটি টাকার মালিক!
ইম/