তাপপ্রবাহের কারণে অনেকেই বাসার জন্য শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি কেনার পরিকল্পনা করছেন। তবে সে ক্ষেত্রে প্রথমেই যে চিন্তা মাথায় আসে, সেটি হলো বিদ্যুৎ বিল কতটা বাড়বে।
জমানো টাকা এককালীন ব্যয় করে এসি কিনে ফেলা অনেক পরিবারের পক্ষেই সম্ভব। কিন্তু মাসে মাসে উচ্চ হারে বিদ্যুৎ বিল দেওয়া কঠিন। বিক্রেতারা বলছেন, সঠিক এসিটি না কিনলে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ইলেকট্রনিক পণ্যের প্রতিষ্ঠানগুলো এসি তৈরির সময় বিদ্যুৎ খরচের বিষয়টি বিবেচনায় রাখে। বর্তমানে কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ‘ইনভার্টার’ প্রযুক্তির এসি তৈরি করছে। গ্রাহকেরাও এ ধরনের এসি বেশি পছন্দ করছেন।
কোম্পানিগুলো জানায়, ইনভার্টার প্রযুক্তিতে এসি প্রথমে পূর্ণ শক্তিতে চালু হয়। পরে ঘরের আরামদায়ক তাপমাত্রা ঠিক রেখে এসিটি শক্তি খরচ কমিয়ে আনে। এভাবে কম শক্তিতে চলার কারণে কম বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় এবং বিল কমে আসে।
ইলেকট্রনিক পণ্য বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রোমার্টের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার মো. জুলহক হোসাইন বলেন, ইনভার্টার প্রযুক্তির এসিতে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করা সম্ভব। এসির অন্যতম প্রধান অংশ হলো কম্প্রেসর। ইনভার্টার এসির কম্প্রেসরের স্থায়িত্ব বেশি দিন থাকে। এ ধরনের কম্প্রেসরে ১০ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা দেয় কোম্পানিগুলো। বিপরীতে নন-ইনভার্টার এসির কম্প্রেসরে দেওয়া হয় ৩ থেকে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি।
কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এক টন সক্ষমতার একটি ইনভার্টার এসিতে মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, যেখানে একই সক্ষমতার নন-ইনভার্টার এসিতে বিল আসতে পারে দেড় হাজার টাকার মতো।
এক টনের বেশি সক্ষমতার এসিতে বিদ্যুৎ বিল আরও বেশি আসে। যেমন ইনভার্টার প্রযুক্তির এসিতে দেড় টনে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, দুই টনে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, আড়াই টনে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৯০০ টাকা এবং তিন টনে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল আসতে পারে। অন্যদিকে নন-ইনভার্টার প্রযুক্তির এসির ক্ষেত্রে দেড় টনে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, দুই টনে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা, আড়াই টনে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা এবং তিন টনে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল আসতে পারে।
রুমের প্রয়োজন অনুসারে এসির সঠিক তাপমাত্রা নির্বাচন করাও গুরুত্বপূর্ণ। এসি চলার সময় ঘরের জন্য দরজা-জানালা ভালো করে লাগানো উচিত। এগুলো করা গেলে এসির কর্মক্ষমতা ঠিক থাকে ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। বর্তমানে অনেক এসিতে ‘স্লিপ মোড’ ও ‘টাইমার’ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ব্যবহারে নির্দিষ্ট সময় পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসি বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য এই প্রযুক্তিগুলো ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিপণনকারীরা।