মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলম হুসাইন ও সদস্য আলিউল আজিম শাহিনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে ঝাড়ু মিছিল করেছে। তাদের অভিযোগ, ভিজিএফ কার্ডসহ সরকারি নানা সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র নারী ও পুরুষদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বামন্দী-কাজিপুর সড়কের বজ্রপুর নতুন পাড়া এলাকায় এই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী সড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে সবধরনের যানচলাচল বন্ধ করে দেয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান আলম হুসাইন ও সদস্য আলিউল আজিম শাহিন ভিজিএফ (ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং) কার্ড দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নতুন বজ্রপুর গ্রামের অন্তত ১৫/২০ জনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। দিনের পর দিন তারা ঘুরেও কার্ড পাননি, তাই বাধ্য হয়ে তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
এ বিষয়ে বজ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, মাসে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার জন্য যে কার্ডের কথা বলা হয়েছিল, সেই কার্ড দেওয়ার জন্য দুই বছর আগে ২৫০০-৫০০০ টাকা নিয়েছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্ডও দেয়নি এবং টাকা ফেরতও দেয়নি।
আরেক বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান ও মেম্বার আমাদের গ্রামে কার্ড দেয়নি, তাই আমরা বিক্ষোভ করেছি। ঈদুল ফিতরের সময় ১০ কেজি চাল বরাদ্দ হলেও আমাদের গ্রামে চাল দেওয়া হয়নি।
এছাড়া কয়েকজন নারী অভিযোগ করেন, শাহিন মেম্বরের মাধ্যমে চেয়ারম্যান ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন, তবে কার্ড দেননি। তারা বলেন, ভোট চাইবেন না, কার্ডও দেবেন না, টাকা ফেরত চাইলে গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আলিউল আজিম শাহিন বলেন, নতুন বজ্রপুর গ্রামে আমি ভোট চাইতে যাইনি এবং টাকা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলম হুসাইন বলেন, আমি কারোর কাছ থেকে টাকা নেয়নি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, যদি কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় যে, কার্ড দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া হয়েছে, তবে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি ১০ কেজি চাল দেওয়ার প্রাপ্য থাকে, তবে কেন তা বিতরণ করা হয়নি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উদ্যোগী হয়েছে।
