ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় এক রাতেই চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে এই হামলা চালিয়েছে, যার কারণে গাজার পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (প্রাক্তন টুইটার) এক পোস্টে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেছেন এবং যুদ্ধবিরতি মেনে চলার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বলেন, “গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।
আমি যুদ্ধবিরতি মেনে চলার এবং মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব যেসব জিম্মি এখনও মুক্তি পায়নি, তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার জন্য জোরালোভাবে আবেদন করছি।”
গাজার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বোমা হামলা চালানো হয়, যখন অনেক ফিলিস্তিনি সেহরি খাচ্ছিলেন। হামলায় গাজার ডি-ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী ইশাম দা-আলিস এবং হামাসের কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৪১৩ জনে পৌঁছেছে, এবং অনেকেই ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে আছেন, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে যে তারা হামাসের “সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তু” তে হামলা চালিয়েছে, তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলি এই হামলাকে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করেছে। অধিকাংশ নিহতই নারী ও শিশু, এবং এর মধ্যে অনেকেই বাড়ির মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের শিকার হয়েছেন।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকেও এই হামলার প্রতি নিন্দা জানানো হয়েছে। চীন, ইয়েমেন, অস্ট্রেলিয়া এবং বেলজিয়ামের কর্মকর্তারা ইসরায়েলের হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে, চীন জানিয়েছে, তারা গাজায় পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাওয়ার যেকোনো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই হামলার মাধ্যমে আরও শক্তিশালী সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন, তবে হামাস এটিকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মন্তব্য করেছে। হামাসের কর্মকর্তা ইজ্জত আল রিশেক বলেন, “ইসরায়েল তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছে, এবং এখন বন্দি ইসরায়েলি সেনাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।”
বিশ্বজুড়ে এই হামলার প্রতিক্রিয়া এখনও আসছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলি গাজার মানুষদের জন্য মানবিক সহায়তা দ্রুত সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে।
পড়ুন: ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল : হোয়াইট হাউস
দেখুন: ভেস্তে গেলো যুদ্ধবিরতি, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হা*ম*লা |
ইম/