চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকায় ডিসি হিলে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত হামলায় অংশ নেয়। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলের মঞ্চের কাঠামো ভেঙে ফেলার পাশাপাশি চেয়ার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী টিটু বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আনুমানিক ২০ থেকে ২২ জন ছেলে-মেয়ে এসে ‘স্বৈরাচারের দোসরেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে তাদের উগ্রতা দেখে আমরা একপাশে সরে দাঁড়াই। এরপর তারা ডেকোরেশনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলল এবং মঞ্চের পেছনের কাপড়ও ছিঁড়ে ফেলে। হামলার পর পুলিশ সদস্যরা এসেছেন। আগামীকাল অনুষ্ঠান করার মতো অবস্থা এখন আর নেই। আমি শুনেছি, আমরা যখন ডিসি অফিসে মিটিং করেছিলাম ওইদিন ওখানে যারা উপস্থিত ছিল তাদের কয়েকজন হামলার সময়ও ছিল। ব্যাক স্টেজের ডিজাইন তারা ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আগামীকালের অনুষ্ঠান আমরা বাতিল করছি।
এদিকে গত ১০ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে ডিসি হিলে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়। শর্ত হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর নামের তালিকা প্রশাসনকে আগেই দেখাতে বলা হয়। একই সঙ্গে পহেলা বৈশাখের এ অনুষ্ঠান দেখভাল করার জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি তদারকি কমিটিও করে দেওয়া হয়েছে।
আজ (রোববার) ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ অভিযোগ তুলে প্রায় ২০টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ডিসি হিলের পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এদিন বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সংগঠকদের কাছে এই তালিকা পাঠানো হয়।
র আগে এদিন সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের নেতৃত্বে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ এই মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মূলত জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস), বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া স্মারকলিপিতে এই সংগঠনগুলোকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সুদীপ্ত বিশ্বাস বিভু নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বৈশাখী মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে। ২০ থেকে ২২ জন লোক সন্ধ্যার সময় অতর্কিতে ডিসি হিলে ঢুকে ভাঙচুর করে চলে গেছে। শুরু থেকেই চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালনে বিভিন্নভাবে বাধা দিয়ে আসছিল। অনুমতি দেওয়া হয়েছে একেবারে শেষ মুহূর্তে।
পড়ুন : চট্টগ্রামে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০