লেন্সটা নির্দিষ্ট কোনো পাওয়ারে সীমাবদ্ধ নেই। চশমা বুঝবে আপনার চোখ কী দেখতে চায়। এমনই প্রযুক্তির লেন্স লেগেছে চশমায়। ‘স্মার্টলাইফ লেন্স’ নামে পরিচিত এই লেন্স নিয়ে এসেছে বিশ্বখ্যাত লেন্স নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জাইস।
শুধু চশমা নয়, ফটোগ্রাফিক ও সিনেমার ক্যামেরা, মাইক্রোস্কোপ, মেডিকেল প্রযুক্তি, ক্যামেরা, বাইনোকুলার ও টেলিস্কোপে জাইসের লেন্স ব্যবহৃত হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণা, চিকিৎসা বিজ্ঞান, মহাকাশ গবেষণা কিংবা ফটোগ্রাফি শিল্পের বিকাশ, সব ক্ষেত্রেই জাইসের লেন্স প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে এগিয়ে নিয়েছে সময়ের সঙ্গে, সময়ের আগে।
১৮৪৬ সালে জার্মানির এক ছোট ওয়ার্কশপে অপটিকস প্রকৌশলী কার্ল জাইস এ প্রতিষ্ঠানটির গোড়াপত্তন করেন। এটি শুরু থেকেই সবচেয়ে নির্ভুল ও স্বচ্ছ অপটিক্যাল প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ক্রমাগত গবেষণা করে এসেছে। ১৭৮ বছর ধরে অপটিক্যাল প্রযুক্তিতে উদ্ভাবনের জন্য তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্পেকটেকল লেন্সে নেতৃত্বের পর বিশ্বের প্রথম উচ্চ-রেজ্যুলেশনের মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার জাইস-এর এক অন্যতম মাইলফলক।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে জাইস-এর অপটিক্যাল ডায়াগনস্টিকস রোগ-নির্ণয় ও সার্জারিতে এনেছে যুগান্তকারী উন্নয়ন। এটি ৩০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ীর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় সহযোগী হয়েছে। এর নির্ভুল লেন্স বিশ্বব্যাপী মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ও জীবনমান উন্নত করতে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে।
ল্যাব ও অপারেশন রুম ছাড়িয়ে জাইস-এর বিচরণ প্রসারিত সুদূর মহাকাশ পর্যন্ত। এর লেন্স ধারণ করেছে অ্যাপোলো ১১ চন্দ্রাভিযান ও চাঁদে মানুষের প্রথম পদক্ষেপ। মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা’র সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে চাঁদে অবতরণের জন্য বিশেষভাবে বায়োগন ৫.৬/৬০ ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল লেন্স ডিজাইন করেছে জাইস। কিংবদন্তি হাবল স্পেস টেলিস্কোপের উত্তরসূরি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপেও ব্যবহৃত হয়েছে জাইসের মেকানিক্যাল অপটিক্যাল প্রযুক্তি।
চলচ্চিত্র শিল্পেও অগ্রগামী জাইসের সিনেমাটোগ্রাফি লেন্স ও ক্যামেরা। এর ক্যামেরা লেন্সে ধারণ করা হয়েছে ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ ট্রিলজির মতো অসংখ্য কালজয়ী অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র। এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রকৌশল পুরস্কার ক্যাটাগরিতে ১৯৮৭, ১৯৯৯ ও ২০১২ সালে বিশ্বের চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ও আলোচিত অস্কার পুরস্কার জিতে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক স্মার্টফোন প্রযুক্তিতেও নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে জাইস। স্মার্টফোন ফটোগ্রাফিকে অনন্য মাত্রায় উন্নত করার জন্য গ্লোবাল স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভোর সঙ্গে সর্বপ্রথম এক্স সিরিজের মাধ্যমে ২০২১ সাল থেকে কো ইঞ্জিনিয়ারড স্মার্টফোন নিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এরইমধ্যে, জাইস-এর ক্যামেরা সমৃদ্ধ ভিভোর এক্স-সিরিজের মডেল ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ভিভো এবং জাইসের যৌথ আর এন্ড ডি প্রোগ্রামের সহায়তায় ফটোগ্রাফি ও সিনেমাটোগ্রাফিতে এনেছে নতুনত্ব। এবার জাইসকে আরও হাতের নাগালে পৌঁছে দিতে ভি-সিরিজেও প্রথমবারের মতো এই লেন্সের স্মার্টফোন আসবে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
ভিভো প্রসঙ্গে
ভিভো একটি প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যা মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে স্মার্ট ডিভাইস ও ইন্টেলিজেন্ট সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন করে। মানুষ আর ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করাই প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য। অনন্য সৃজনশীলতার মাধ্যমে ভিভো ব্যবহারকারীদের হাতে যথোপযুক্ত স্মার্টফোন ও ডিজিটাল আনুষাঙ্গিক তুলে দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধকে অনুসরণ করে ভিভো টেকসই উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়ন করেছে; সমৃদ্ধ ও দীর্ঘস্থায়ী বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান হওয়াই যার ভিশন।
স্থানীয় মেধাবী কর্মীদের নিয়োগ ও উন্নয়নের মাধ্যমে শেনজেন, ডনগান, নানজিং, বেজিং, হংঝু, সাংহাই, জিয়ান, তাইপে, টোকিও এবং সান ডিয়াগো এই ১০টি গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রে (আরএন্ডডি) কাজ করছে ভিভো। যা স্টেট-অফ-দ্য-আর্ট কনজ্যুমার টেকনোলজির উন্নয়ন, ফাইভজি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন, ফটোগ্রাফি এবং আসন্ন প্রযুক্তির ওপর কাজ করে যাচ্ছে। চীন, দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ভিভোর পাঁচটি প্রোডাকশন হাব আছে (ব্র্যান্ড অথোরাইজড ম্যানুফ্যাকচারিং সেন্টারসহ) যেখানে বছরে প্রায় ২০০ মিলিয়ন স্মার্টফোন বানানোর সামর্থ্য আছে। এখন পর্যন্ত ৬০টিরও বেশি দেশে বিক্রয়ের নেটওয়ার্ক আছে ভিভোর এবং বিশ্বজুড়ে ৪০০ মিলিয়নের বেশি ভিভো স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে।