বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে সহিংসতায় সারা দেশে ৬৫০ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩২ জন শিশু। শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে বিক্ষোভকারী, পথচারী, সাংবাদিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।
সম্প্রতি কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। বিক্ষোভ দমনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহত হন বিক্ষোভকারী, পথচারী, সাংবাদিক এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও। পরে ৫ আগস্ট গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হন সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই ঘটনাকে ঘিরে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় শুক্রবার একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪০০ জন এবং ৫ ও ৬ আগস্ট আরও ২৫০ জন নিহত হয়েছেন। এই তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং আন্দোলনকারীদের মুভমেন্টকে উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
জেনেভা থেকে প্রকাশিত ১০ পাতার ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর এবং বিশ্বাসযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নির্বিচারে বল প্রয়োগে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং প্রাণঘাতী গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। এর মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ও ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক, ও রাজনৈতিক অভিযোগের সমাধানে উন্মুক্ত সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ, যার লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের সকল মানুষের স্বার্থে কাজ করা।