জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে দেরি হলে ফ্যাসিস্ট শক্তি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের দুটি সংগঠন আয়োজিত ইফতারে তিনি বলেন, শুধুমাত্র ‘ফ্যাসিস্ট’ শক্তিগুলোই নয়, একই সঙ্গে জঙ্গি-উগ্রপন্থিরাও সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে।
রোববার সাংবাদিকদের ইফতার আয়োজনের আলোচন পর্বে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা এখন যেটা চাইছি, অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চাইছি, যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা সবাই মিলে দায়িত্ব দিয়েছি, তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে, যেটা আমরা বারবার করে বলেছি, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে সমস্ত সংস্কারগুলো আছে সেগুলো করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে যাবেন।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা একটা ভয়াবহ দানবীয় পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসেছি। আজকে সেখানে আমাদেরকে একটু ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। পত্রিকার পাতা খুললেই আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি, হত্যা-খুন-জখম-ধর্ষণ এগুলো এমন একটা জায়গায় চলে যাচ্ছে, এগুলো আমাদের সকলকে উৎপীড়িত করছে।”
তিনি বলেন, “অন্যদিকে আমরা দেখছি যে ইয়াং জেনারেশন, আমাদের ছাত্ররা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। আবার দেখছি যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে, অর্গানাইজেশন আছে তাদের কর্মীরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নেমে এসছে।”
দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “যত দ্রুত নির্বাচন হবে, যত দ্রুত জনগণের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে আসবেন, পার্লামেন্টে এসে একদিকে তারা দেশ পরিচালনা করবেন অন্য দিকে অন্য যে বাকি যেসব প্রয়োজনীয় সংস্কার আছে সেগুলো আমরা এক সাথে করতে পারব।”
“কারণ আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে, যত দেরি হবে তত বেশি আবার বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে পরাজিত করবার জন্য বিরুদ্ধ শক্তি-ফ্যাসিস্ট শক্তিরা মাথাচাড়া দিতে শুরু করে দেবে। তারা শুধু নয় একই সঙ্গে যারা জঙ্গি মনোভাব পোষণ করে থাকেন, যারা উগ্র মনোভাব পোষণ করে থাকেন তারাও এই সুযোগগুলো নেওয়ার চেষ্টা করবে।”
সংস্কার করার বিষয়ে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা ৩১ দফা দুই বছর আগে দিয়েছি, যে সংস্কারের কথা কেউ বলেনি। সেই সংস্কারগুলো আজকে উঠে এসছে যার সাথে খুব একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে না। সেজন্য আমরা মনে করি যে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত। নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা কিছুটা হলেও রক্ষা করা দরকার।”
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের যৌথ উদ্যোগে এ ইফতার আয়োজন করা হয়।
ইফতারপূর্ব আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের এই অংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের এই অংশটির সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম।
পড়ুন : রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী হেনস্তার প্রবণতা বিপজ্জনক : মির্জা ফখরুল