নরসিংদী মাধবদীতে গতকাল (৭ এপ্রিল) সংঘটিত একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় দৈনিকসহ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দকে জড়িয়ে যেসব মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নরসিংদী জেলা শাখা।
নরসিংদী জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ (মঙ্গলবার) বিকালে এই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। জামায়াত ও শিবিরের কোনো নেতাকর্মী ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা সেলিমের মিয়ার সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়াও ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক মো. আবু সাঈদ এ ঘটনার সাথে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও বক্তব্য দিয়েছেন।
জামায়াতের জেলা আমীর মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন ও সেক্রেটারি আমজাদ হোসাইন এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় যে, “উক্ত ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো নেতাকর্মী বা সংগঠন জড়িত নয়। নরসিংদীর মাধবদীতে ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কয়েকজন ঋণ খেলাপির কথাকাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা হয়েছে, যা আমাদেরকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জামায়াত-শিবিরকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং তাদের সুসংগঠিত ধারাবাহিক কার্যক্রম ব্যাহত করতেই এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমরা চাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
জেলা প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম বলেন, “সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী দায়িত্বশীলদের বক্তব্য নেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু সংবাদ প্রকাশে তা অনুসরণ করা হয়নি। প্রকৃত ঘটনা গোপন রেখে আমাদেরকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দুঃখ প্রকাশ করছি।”
এদিকে সরজমিনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিল্প শহর মাধবদী গিয়ে কথা হলে কয়েজন ব্যবসায়ী বলেন, ইসলামী ব্যাংক মাধবদীতে প্রতিষ্ঠা লঘ্ন থেকে কোন চাঁদা বাজদের কবলে পরেনি। এছাড়া এ শহরে প্রায় অর্ধশত ব্যাংক রয়েছে সবাই নির্বঘ্নে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন, কোন দিন কোন রাজনৈতীক গোষ্ঠির কারণে ব্যাংকিং খাত প্রশ্নবিদ্ধ হয় নাই। ইসলামি ব্যাংকের বিষয়টি একটি মহল বিরুপ প্রচার চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এ শহরের ব্যবসায়ীরা।
কেন মারধরের শিকার হলেন ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব-দুস্ত অসহায়দের পাশে দাড়াতে ছাত্রকল্যাণ ফাউন্ডেশন এর ব্যানারে গত ২৭ মার্চ শুভাকাঙ্খীদের কাছ থেকে ১শ ২শ যার যার খুশিমত দেওয়া দান করা টাকা, কালেকশন করেন ইসলামী ছাত্র শিবির এর কয়েজন কর্মী। এসময় মাধবদীতে ইসলামী ব্যাংক অফিস চলাকালিন সময় ইসলামী ব্যাংকের কয়েকজন কর্মীর কাছ থেকে ১শ টাকা ২শ টাকা তুলে দিতে প্রস্তাব করেন কর্মীরা। কিন্তু সেলিম আহমেদ নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা এ বিষয়টিকে চাঁদার সাথে তুলনা দিয়ে শিবির কর্মীদের অপমান করেন। পরে ইসলামী ব্যাংকের ওই কর্মকর্তার সাথে বাকবিতণ্ডা তৈরী হয়। এরপর গতকাল ৭ এপ্রিল মারধরের শিকার হয় ইসলামী ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা। পরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। তবে কে বা কারা মারধর করেছে সনাক্ত করতে পারেনি ব্যাংক কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ।
ইসলামী ব্যাংক মাধবদী শাখার ব্যবস্থাপক মো. আবু সাঈদ বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত, চাঁদা দাবীর কোন ইস্যু না। এ বিষয়টি মাধবদী বাজার বনিক সমিতির লোকজন সুষ্ট সমাদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে একটি মহল রাজনৈতীক ফায়দা লুটতে মনগড়া তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করছেন বলে জানান জামায়েত নেতারা।
পড়ুন : বদর দিবসে নরসিংদীতে ২শ কোরআনে হাফেজদের সংবর্ধনা দিল ছাত্রশিবির