যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের মালিডাঙ্গা গ্রামে জাল ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দিয়ে অন্যের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা ও হত্যার অভিযোগে বহুল আলোচিত ভূমিদস্যু শম্ভু নাথ মল্লিক ও তার ছেলে আরজু মল্লিক বিপুলের নামে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
তামান্না রহমান নামে এক ভুক্তভোগী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলো সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের মালিডাঙ্গা গ্রামের মৃত গোপালচন্দ্রের ছেলে শম্ভু নাথ মল্লিক ও শম্ভু নাথ মল্লিকের ছেলে আরজু মল্লিক বিপুল।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদীর পরিবারের যশোর সদর থানার মালিডাঙ্গা মৌজায় আর এস ১৩৫ নম্বর খতিয়ানের ৭৮ নম্বর দাগে ৪৬ শতক, ৭৯ দাগ নম্বরে ১০ শতক, ৮৪ নম্বর দাগে ১৯ শতক, ১০৭ নম্বর দাগে ২১ শতক, ১০৮ নম্বর দাগে ৮ শতক, ১০৯ দাগে ৬ শতকসহ ১ একর শতক ক্রয়কৃত জমি রয়েছে। তারা খাজনা পরিশোধ করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু শম্ভু নাথ মল্লিক ও তার ছেলে আরজু মল্লিক বিপুল দীর্ঘদিন ধরে ওই সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে আসছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তফসিলয় জমি বিধান চন্দ্র কর্মকার নিয়োগী ও তার অপর ৫ ভাইয়েরর ছিল । তাদের কাছ থেকে ডা. হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ক্রয় করেন। এরপর ডা. হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে মামলার বাদী তামান্নার শ্বশুর দেয়াপাড়া গ্রামের কাজী মশিউর রহমান ক্রয় করেন। কিন্তু ভূমিদস্যু শম্ভু নাথ মল্লিক ও তার ছেলে আরজু মল্লিক বিপুল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাল ওয়ারিশ কায়েম সনদ তৈরি করে জমি দখলের চেষ্টা চালায়।
একপর্যায়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধ্যমে জানা যায়, মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাল ওয়ারিশ সার্টিফিকেট তৈরি করেছেন। এরপর চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লিখিত আকারে জাল ওয়ারিশ সার্টিফিকেট বাতিল করলেও ভূমিদস্যু শম্ভু নাথ মল্লিক ও তার ছেলে আরজু মল্লিক ক্ষিপ্ত হয়। এরপর তারা ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে জমি জোরপূর্বক দখল করতে আসলে বাদীর স্বামী নাইমুর রহমান হিমেল বাধা দেন। এসময় শম্ভু নাথ, বিপুল সহ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। দীর্ঘদিন ভয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ন্যায় বিচার পেতে আদালতে মামলা করেন।
যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান জানান, ভুল তথ্য দিয়ে শম্ভু নাথ মল্লিক ও তার ছেলে আরজু মল্লিক বিপুল ওয়ারিশ কায়েম সার্টিফিকেট নিয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে জাল জালিয়াতির বিষয় জানতে পারলে সরেজমিন তদন্ত করে সনদটি বাতিল করা হয়েছে। সনদ বাতিল করার পরেও কাজী মশিউর রহমানের জায়গা দখল করার চেষ্টা করছে বলে শুনেছি। এ বিষয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর পিবিআইয়ের এসআই হাবিবুর রহমান জানান, আদালত থেকে মামলার কপি পেয়েছি। দ্রুতই তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।