গণভবনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’–এর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে থাকবেন শিক্ষক ও লেখক এবাদুর রহমান। আর কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম।
এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে থাকবেন শিক্ষক ও লেখক এবাদুর রহমান। আর কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম।
আজ শনিবার গণভবনের ফটকে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই কমিটির ঘোষণা দেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন লেখক ও মানবাধিকারকর্মী মুসতাইন বিল্লাহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক জাহিদ সবুজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক নুরুল মোমেন ভূঁইয়া, শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক তানজিম ওয়াহাব, লেখক ও গবেষক সহুল আহমেদ, স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম, স্থাপত্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান স্থপতি মো. আসিফুর রহমান ভূঁইয়া, নকশাবিদ আর্কিটেক্টসের লিড আর্কিটেক্ট বায়েজিদ মাহবুব খন্দকার, ডিজাইন ওয়ার্কস গ্রুপের আর্কিটেক্ট তানজিম হাসান সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের সভাপতি বা উপযুক্ত প্রতিনিধি। এ ছাড়া কমিটিতে এক বা দুজন ছাত্র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হবেন।
এদিকে ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ – এই স্লোগান নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবন মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারকে চেক প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে চেক প্রদান করা হয়।
চেক গ্রহণ করে আবেগাপ্লুত পরিবারের সদস্যরা তাদের সন্তানদের শহীদের মর্যাদা প্রদানের দাবি জানান। অনুষ্ঠানে গণ অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারীদের সর্বোচ্চ সম্মাননা দেওয়ার কথা জানানো হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ২০০ জনের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। আজ শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর হাতে চার ধাপে সহায়তার চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকার পর দেশের অন্য বিভাগেও ধাপে ধাপে গণ-অভ্যুত্থানের সব শহীদদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আহত ব্যক্তিদের দেওয়া হবে এক লাখ টাকা করে। এই টাকা বিকাশে দেওয়া হবে।
সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা দুই ধাপে ১০০ পরিবারের মধ্যে চেক বিতরণ করেছেন। প্রথম ধাপে ৫০টি শহীদ পরিবারের হাতে চেক হস্তান্তর করেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘এই কাজ আমরা (মুক্তিযুদ্ধের পর) ’৭২, ’৭৩ সালে করতে পারিনি। সে জন্য বলব, আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি।’
দ্বিতীয় ধাপে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ৫০ শহীদ পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন। তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও এরই মধ্যে নগরে ভবনে এসে উপস্থিত হয়েছে। তাঁরা দুই ধাপে বাকি ১০০ পরিবারের মধ্যে চেক তুলে দেবেন।
শাহবাগে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পাশে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয় রয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত ব্যক্তিরা যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে সেখানে আসতে বা ফাউন্ডেশনের জরুরি হেল্পলাইন নম্বর ১৬০০০-তে যোগাযোগ করতে পারবেন।
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি শহীদ এবং ২৪ হাজার আহত ব্যক্তির পরিচয় প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। তারা জানায়, তালিকাটি বারবার যাচাই করা হচ্ছে।