যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ভবিষ্যৎ ধীরে ধীরে অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। চীনা মালিকানাধীন এই জনপ্রিয় অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার নতুন আইনের প্রেক্ষিতে এটি তার অন্যতম বড় বাজার হারাতে বসেছে।
১৭ কোটি আমেরিকান ব্যবহারকারী নিয়ে এ্যাপটি এখন মার্কিন বিচারব্যবস্থার সর্বোচ্চ পর্যায়ে লড়াই করছে।
নতুন আইন
যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট অফ কলাম্বিয়া সার্কিটের ফেডারেল আপিল আদালত টিকটকের বিরুদ্ধে একটি আইন বহাল রেখেছে। যার ফলে এই অ্যাপের চীনা মালিক বাইটড্যান্সকে অ্যাপটি একটি অ-চীনা কোম্পানির কাছে বিক্রি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে বাইটড্যান্স অ্যাপটি বিক্রি না করলে যুক্তরাষ্ট্রে এ্যাপটি নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।
এই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ উদ্বেগ থেকে তৈরি করা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই এ্যাপটি চীনা সরকারের কাছে তথ্য সরবরাহ করতে পারে।
আর এ্যাপ কর্তৃপক্ষ বলছেন, এই আইন মুক্ত বাকস্বাধীনতার ওপর আঘাত হানছে। এ্যাপটির মুখপাত্র মাইকেল হিউজেস বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা আমেরিকান জনগণের প্রতি সরাসরি সেন্সরশিপ এবং ভুল তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে।চ
ট্রাম্পের অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আইনটি কার্যকর হবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের একদিন আগে। যদিও ট্রাম্প এই আইনের ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে্ছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বলেছিলেন, যারা আমেরিকায় টিকটক বাঁচাতে চান, তারা ট্রাম্পকে ভোট দিন।
আইনটি কার্যকর হলে অ্যাপল এবং গুগলের মতো কোম্পানিগুলোর ওপরও চাপ সৃষ্টি হতে পারে। কারণ আইন অনুযায়ী তাদের অ্যাপ স্টোর থেকে এ্যাপটি সরিয়ে ফেলতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টে আপিল
এ্যাপ কর্তৃপক্ষ এই নিষেধাজ্ঞাটি সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তারা আশা করছেন, সুপ্রিম কোর্ট আমেরিকানদের বাকস্বাধীনতার অধিকারের সুরক্ষা দেবে।
তবে তাদের আবেদনটি মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত হবে কিনা, তা অনিশ্চিত।
সাধারনের প্রতিক্রিয়া
টিকটকের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্প নিজেই টিকটকে ১.৪৬ কোটি ফলোয়ার নিয়ে সক্রিয় রয়েছেন। টিকটকের ভবিষ্যতের উপর মার্কিন প্রযুক্তি ও সামাজিক মিডিয়া ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্কের আরও একটি মোড় সুস্পষ্ট হবে।