কুষ্টিয়ায় দায়িত্বরত এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে জুতা পেটা করার অভিযোগ উঠেছে দুই নারীর বিরুদ্ধে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কোর্ট স্টেশন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
শহরে যানজটে আটকা পড়ে ক্ষুব্ধ দুই নারী দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক পুলিশকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী সোহানা ইসলাম (৪৪) এবং হাউজিং বি-ব্লকের বাসিন্দা মোবাইল ব্যবসায়ী রিপন হোসেনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার শান্তা (৩৯)।
এ ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সারাদিনই কুষ্টিয়া শহরে মানুষজন আলোচনা করেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
যেভাবে জুতা পেটা করার ঘটনা
ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, যানজটের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক কনস্টেবল নাজমুল হাসান। হঠাৎ করেই এক নারী এসে নিজের জুতা দিয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। তখন পাশে থাকা আরেক নারীও জুতা পেটায় যোগ দেন। আশপাশের লোকজন কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই দুই নারী ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ঘটনাস্থলের পাশের ওষুধের দোকানদার আসিফ বলেন, “ওই নারী তার বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন। এ সময় শাটল ট্রেন এসে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানোর কারণে রেল গেইটের দক্ষিণ পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। ট্রেন চলে যাওয়ার পর ওই নারী তার রিকশাটিকে পার করে দিতে বলেন। কিন্তু যানজটের কারণে ট্রাফিক পুলিশ সেটা করে দিতে পারেনি।
“এর কিছুক্ষণ পর ওই নারীসহ আরেক নারী এসে পুলিশকে বেধড়ক মারধর করে চলে যান। তবে ঠিক কী কারণে জুতা পেটা করা হয়েছে সেটা আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।”
ঘট্নাস্থলের কাছে ফুটপাতের বাদাম বিক্রেতা নিরু চাঁদ বলেন, “দুই নারী এসে শুধু ট্রাফিক পুলিশকে স্যান্ডেল দিয়ে মারধরই করছে; মুখে কোনো কথাও বলতে শুনিনি। মুখে কথা বললে হয়তো বুঝতে পারতাম কী কারণে মারছে। তারপর দুই নারী চলে যান।”
আক্রান্ত পুলিশ সদস্য নাজমুল হাসান বলেন, “আমি সদ্য ঢাকা মহানগর পুলিশ থেকে বদলি হয়ে এসেছি। থাকি পুলিশ লাইনের ব্যারাকে। সহকর্মীদের বাইরে তেমন কারো সঙ্গে এখনও ঠিকমতো পরিচয়ই হয়ে উঠেনি।
“অথচ আজকে আমার ওপর দুই নারী হামলা করেছে। জুতা পেটার বিষয়টি আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েও পড়েছে। সে কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই রাষ্ট্রীয় কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে মামলা করেছি।”
গ্রেপ্তার সানজিদা আক্তার শান্তার স্বামী রিপন হোসেন বলেন, “সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের একটা মাইক্রোবাস এসে এনএস রোড পাঁচ রাস্তার মোড়ের দোকান থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর বাসায় গিয়ে আমার স্ত্রী শান্তাকে তুলে নিয়ে থানায় যায়। তখনও আমি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। পরে পুলিশের দেখানো ভিডিও ফুটেজ দেখে আমি আমার স্ত্রীকে শনাক্ত করি।
“ওই ভিডিও ফুটেজ দেখে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি। এটা কিভাবে সম্ভব? আমার স্ত্রী শান্তা এমন অস্বাভাবিক আচরণ কেন করল তা আমিও বুঝে উঠতে পারছি না। এমনকি এর আগে শাস্তার এমন আচরণ আমার চোখে পড়েনি।”
কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেহাবুর রহমান বলেন, দুই নারীকে আদালতে পাঠানো হবে।