মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ফক্স নিউজের হ্যানিটি’ শোতে এ কথা জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র। এই তথ্যটি রয়টার্সও নিশ্চিত করেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, হামলার আগে ইসরায়েল তাদের সঙ্গে পরামর্শ করেছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাস, হুথি, ইরান ও তাদের সহযোগীরা কেবল ইসরায়েলকেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রকেও টেরোরাইজ করতে চায়। তারা সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদের মূল্য চোকাতে হবে।
গাজায় এই হামলা চালানোর পর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের কথা অস্বীকার করেছে। হামাস তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করেছে। এটি গাজায় তীব্র উত্তেজনা তৈরি করেছে। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর প্রথম পর্ব শেষ হলেও দ্বিতীয় ধাপের আলোচনাও চলছে। এর মধ্যেই ইসরায়েলের সামরিক হামলা চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলা চলমান রেখে তাদের লক্ষ্য ছিল হামাসের কমান্ডার এবং রাজনৈতিক নেতাদের। এই হামলা গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে চালানো হয়েছে, যার মধ্যে গাজা সিটি, খান ইউনিস, রাফা ও দেইর আল বালাহও রয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় নিহতদের মধ্যে অনেকেই শিশু। হামলার কারণে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং আহতদের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে, বিশেষ করে ইসরায়েলি বাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল হামলা চালানোয়, একে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও সামরিক কৌশলের চাপে নতুন দিক হতে পারে। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুসারে, হুথি, হামাস, ইরান এবং তাদের সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে তীব্র ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

এছাড়া, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন, ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর ইসরায়েল হামলা পুনরায় শুরু করেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজার সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণ চালাচ্ছে। শিন বেইটের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হচ্ছে, যেখানে হামাসের নেতৃস্থানীয় সদস্যদের লক্ষ্য করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও রাষ্ট্রীয় নীতির প্রতি প্রতিক্রিয়া আরও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে, ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান এবং তার প্রশাসনের সমর্থনে ইসরায়েলের হামলা করা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্বব্যাপী এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখে, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্কের আরও সুস্পষ্ট রূপরেখা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই হামলা গাজার মানুষদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে এবং আগের তুলনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। যুদ্ধবিরতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হলে, গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সহায়তা ও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে তুলেছে।
পড়ুন: বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগের কথা বললেন তুলসি গ্যাবার্ড
দেখুন: তারেক রহমানকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণ, রাজনীতিতে নতুন মোড়!
ইম/