দেশে যখন রাসায়নিক সার ও উচ্চমাত্রার কীটনাশক ছাড়া সবজি,ফল ও ফসল উৎপাদন ভাবাই যায় না। সেই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছেন ঠাকুরগাঁয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী রনশিয়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আজহারুল ইসলাম চৌধুরী। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক এর বিপরিতে জৈব সার ও জৈব কীটনাশক তৈরি করে ফসল উৎপাদন করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন তিনি। তার এই পদ্ধতি শিখতে প্রতিদিন কৃষকরা ভির করছেন তার কাছে।
আমপাতা, বেল, ধুতরা পাতা সহ বিভিন্ন গাছের পাতা,মাটি, গোবর, বিষ ডাল, তামাক পাতা,নিম পাতা, মেওয়া পাতা,ভেন্না পাতা, ধুতরা পাতা, আমপাতা, বেল পাতা,ভাটি পাতা,পেঁপে পাতা, গো মুত্র, মরিচ,আদা, রসুন, পেঁয়াজ সহ বিভিন্ন পসরা সাজানো হয়েছে পলিথিন কাগজের উপরে দূর থেকে দেখে মনে হয় গ্রামে কবিরাজ বসেছে। কিন্তু তিনি আদৌ কবিরাজ নন। তিনি এসব জিনিসপত্র দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে জৈব সার ও জৈব কীটনাশক তৈরি করছেন।
তিনি ভারতের সুভাষ পালের ন্যাচারাল ফার্মিং ও কৃষি অফিসের প্রশিক্ষণ শেষে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক এর বিপরীতে জৈব সার ও জৈব কীটনাশক তৈরিতে কাজ করছেন।
তিনি তার ৬০ একর জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই সবজি, ধান, ফল, মাছ ও মিশ্র চাষাবাদ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
মূলত কৃষি কাজে উৎপাদন ব্যয় কমাতে ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে তিনি নিজ এলাকায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ।
পোকা-মাকড় দমনে জৈব কিটনাশক স্প্রে হিসেবে দশপুর্ণি ব্যবহার করেন। এতে তিনি পরিমান মত বিষ ডাল, তামাক পাতা,নিম পাতা, মেওয়া পাতা,ভেন্না পাতা, ধুতরা পাতা, আমপাতা, বেল পাতা,ভাটি পাতা,পেঁপে পাতা, গো মুত্র, গোবর, মরিচ,আদা, রসুন, পেঁয়াজ ও পানি দিয়ে ৪০ দিন ড্রামের রেখে সেই রস ব্যবহার করছেন।
অপরদিক ছত্রাক দমনে বাসি টক দই এর সাথে ৩৩ গুন পানি মিশেয়ে স্প্রে ব্যবহার করা হয়।
চারা শোধন করতে তিনি তরল বীজ হিসেবে বীজ আম্রুত ব্যবহার করেন। এতে পরিমান মত দেশি গাভীর গোবর, গোমুত্র, পানি, চুন ও রাসায়নিক মুক্ত মাটি ব্যবহার করেন।
তরল সারের ক্ষেত্রে তিনি তরল অনুজীব সার ব্যবহার করেন । এটিতে পরিমান মত পানি, তাজা গোবর, মুত্র, বুটের বেশন,গুর মাটি ৭২ ঘন্টা রেখে ব্যবহার করা হয়।
ঘন অনুজীব সারের ক্ষেত্রে ঘন জীবাম্রুত ব্যবহার করেন। এটি পরিমাণ মতো দেশি গরুর গোবর, বেসন, গুর, ১মুষ্টি মাটি মিশিয়ে ৭২ ঘন্টা পর ব্যবহৃত হয়।
এছাড়াও তিনি ভেন্নার তেল মাটি মিশ্রণ ২৪ ঘন্টা রেখে ফসলে সিভিআর স্প্রে করেন।
রসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত চাষাবাদ করে তিনি ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন । তার কাছ থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা প্রাকৃতিক উপায়ে সার এবং কীটনাশক তৈরি পদ্ধতি শিখতে আসছেন।
তিনিই রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত চাষাবাদ পদ্ধতির উদ্বুদ্ধ কারি কৃষক।