এক যুগ পর, আবারো সর্বোচ্চ আদালতের মঞ্চে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী। যা বাতিলের মাধ্যমে বিলুপ্ত হয়েছিলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। সেই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ বা পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়েছে। নতুন রায় পক্ষে এলে, আবারো খুলবে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠনের পথ। বিএনপি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরবে।
১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতনের পর, সাধারণ নির্বাচন হয়েছিলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে। তবে, তখন বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করা হয়নি। ১৯৯৬ সালে বিরোধীদের চাপে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান এনে, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে পাস করে বিএনপি।
প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ, ২০১১ সালের ১০ মে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগেই ২০১১ সালের ৩০ জুন, জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।
এবার আপিল বিভাগের সেই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ বা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন, পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাদের একজন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি মনে করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাওয়া পূরণ করতেই, তখন রায় দিয়েছিলো আপিল বিভাগ। যার পরিবর্তন বাঞ্ছনীয়।
ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহাল হলে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কি প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নে এই বিশ্লেষক বলছেন, সংবিধানের আলোকে পরবর্তী নির্বাচন করতে গেলে, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।
এদিকে, বিএনপির এই নেতা মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিলো। বর্তমান সরকারের সময়ে সাংবিধানিক সংস্কারের সুযোগ নেই।
আপিল বিভাগের সেই রায়ের পর, কেটে গেছে ১২ বছর। এই সময়ের মধ্যে কেউ রিভিউয়ের জন্য সর্বোচ্চ আদালতে যাননি। এখন সেই রায় পুনর্বিবেচনার পালা।