18 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

তৃণমূলের প্রচারে কেন তিন প্রধান ফুটবল দলের কর্তারা?

তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করছেন তিন প্রধানের কর্তারা। ময়দানের বড় ক্লাবগুলি সরাসরি রাজনীতিতে।

আগামী ১৩ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ভোট নেয়া হবে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি কেন্দ্রে। এখানকার বিধায়ক পার্থ ভৌমিক সংসদে চলে যাওয়ায় এই কেন্দ্রে নির্বাচন হচ্ছে। এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সনৎ দে। 

প্রচারে তিন প্রধান

শাসক দলের প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমেছেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহমেডানের কর্তারা। প্রার্থীর প্রশংসা করেছে বাংলা ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা আইএফএ।

সনৎ দে-র প্রশংসা শোনা গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের মুখে। তিনি বলেন, “সনৎ একজন দক্ষ সংগঠক। আমরা সবসময় ওর কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছি। ক্লাবের অনুশীলন থেকে ম্যাচ, সবক্ষেত্রেই সাহায্য করেছে।” ভিডিও বার্তায় মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্তের বক্তব্য, “নৈহাটিতে যতবারই আমাদের দল খেলতে গিয়েছে, ততবারই সনতের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছি। দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচিত। নৈহাটি স্টেডিয়ামকে সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করেন।”

মহামেডান কর্তা মহম্মদ কামরুদ্দিন বলেন, “সনৎ নিজেই সব ব্যবস্থা করতে পারেন। যতবার সাহায্য চেয়েছি, উনি পাশে দাঁড়িয়েছেন।” ভিডিও বার্তায় একই সুর আইএফএ-র সচিব অনির্বাণ দত্তের। তাঁর মতে, “দারুণ কাজের মানুষ। খেলার মাঠের সঙ্গে ওর যোগ। এমন মানুষের প্রয়োজন আছে।” 

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে নাগরিক সমাজ পথে নেমেছে। বিচারের দাবিতে মুছে গিয়েছে ভেদাভেদ। চিরশত্রু ইস্টবেঙ্গল ও  মোহনবাগানের সমর্থকদেরও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে।

ফুটবলপ্রেমীদের আন্দোলনে রব উঠেছে, ‘ঘটি বাঙাল এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর।’ সোশ্যাল মিডিয়াতেও ফুটবল ভক্তরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন স্লোগান উঠেছে। গ্যালারিতে টাঙ্গানো হয়েছে অতিকায় ফ্লেক্স। দাবি একটাই, বিচার চাই। 

আরজি কর নিয়ে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে অন্যরকম ছবি দেখা যাচ্ছে উপনির্বাচন ঘিরে। শাসক দলের প্রার্থীর পক্ষে সওয়াল করছেন তিন দলের কর্তারা।

প্রচারে তিন প্রধান

শাসক দলের প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমেছেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহমেডানের কর্তারা। প্রার্থীর প্রশংসা করেছে বাংলা ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা আইএফএ।

সনৎ দে-র প্রশংসা শোনা গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের মুখে। তিনি বলেন, “সনৎ একজন দক্ষ সংগঠক। আমরা সবসময় ওর কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছি। ক্লাবের অনুশীলন থেকে ম্যাচ, সবক্ষেত্রেই সাহায্য করেছে।” ভিডিও বার্তায় মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্তের বক্তব্য, “নৈহাটিতে যতবারই আমাদের দল খেলতে গিয়েছে, ততবারই সনতের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছি। দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচিত। নৈহাটি স্টেডিয়ামকে সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করেন।”

মহামেডান কর্তা মহম্মদ কামরুদ্দিন বলেন, “সনৎ নিজেই সব ব্যবস্থা করতে পারেন। যতবার সাহায্য চেয়েছি, উনি পাশে দাঁড়িয়েছেন।” ভিডিও বার্তায় একই সুর আইএফএ-র সচিব অনির্বাণ দত্তের। তাঁর মতে, “দারুণ কাজের মানুষ। খেলার মাঠের সঙ্গে ওর যোগ। এমন মানুষের প্রয়োজন আছে।”

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে নাগরিক সমাজ পথে নেমেছে। বিচারের দাবিতে মুছে গিয়েছে ভেদাভেদ। চিরশত্রু ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সমর্থকদেরও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে।

ফুটবলপ্রেমীদের আন্দোলনে রব উঠেছে, ‘ঘটি বাঙাল এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর।’ সোশ্যাল মিডিয়াতেও ফুটবল ভক্তরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন স্লোগান উঠেছে। গ্যালারিতে টাঙ্গানো হয়েছে অতিকায় ফ্লেক্স। দাবি একটাই, বিচার চাই।

আরজি কর নিয়ে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে অন্যরকম ছবি দেখা যাচ্ছে উপনির্বাচন ঘিরে। শাসক দলের প্রার্থীর পক্ষে সওয়াল করছেন তিন দলের কর্তারা।

রাজনৈতিক তরজা

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ধরনের প্রচারের বিরোধিতা করেছেন। তিনি আইএফএ-র বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়ার কাছে। তার দাবি, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হোক। প্রয়োজনীয় নির্বাচনী আচরণভঙ্গের অভিযোগ আনা হোক।

এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু লিখেছেন, “একেবারে অনৈতিকভাবে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান ক্লাবের শীর্ষ কর্তারা তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-র পক্ষে প্রচার করছেন। সব চেয়ে আশ্চর্যের হলো ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ফুটবলের গভর্নিং বডি আইএফএ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভোটের আগে সনৎ দেকে জেতানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমার মনে হয় স্পোর্টিং ক্লাব ও গভর্নিং বডির উল্লেখযোগ্য পদে থাকার সুবাদে প্রার্থীকে জেতানোর জন্য আবেদন করা এটা একেবারেই খেলোয়াড়সুলভ নয়। এটা নির্বাচনী আচরণবিধির বিরুদ্ধে যেতে পারে।”

তৃণমূল নেতৃত্ব এর জবাবে আরজি কর আন্দোলনের প্রসঙ্গ টানছেন। শাসক দলের নেতা কুণাল ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “ক্লাবের জার্সি পরিয়ে সমর্থকদের একাংশের নাম করে উই ওয়ান্ট জাস্টিস থেকে উই ওয়ান্ট চেয়ার এ রূপান্তরিত পরিকল্পিত শ্লোগান দিলে সেটা বিপ্লব, আর নৈহাটির দক্ষ ক্রীড়াসংগঠক, যিনি ওই এলাকায় উচ্চমানের ফুটবল টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি ভোটে প্রার্থী, তিন প্রধান ও আই এফ এ কর্তারা তাঁর প্রশংসা বা সমর্থন করলে সেটা রাজনীতি!”

তার প্রশ্ন, “সেদিন জার্সি পরিয়ে সরকারবিরোধী রাজনীতির সময় মনে ছিল না? ন্যায়বিচার সবাই চাই। কিন্তু বিরোধীরা ক্লাবগুলোর জার্সির অপব্যবহার করেছিল।”

সাবেক ফুটবলারদের বক্তব্য

সাবেক ফুটবলার, একসময় মোহনবাগানের তারকা মানস ভট্টাচার্যও ব্যাপারটার মধ্যে দোষের কিছু দেখছেন না। তিনি ডিডব্লিউকে বলেন, “সনৎ আমাদের মাঠেরই লোক। নৈহাটি স্টেডিয়াম রক্ষণাবেক্ষণ করার পিছনে ওর একটা বড় ভূমিকা আছে। ও সব সময় খেলোয়ারদের পাশে থাকে এবং উৎসাহ দেয়। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল মহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তারা ওর পাশে দাঁড়িয়ে ওকে জেতাবার কথা বলেছে। এতে অন্যায়টা কোথায়?”

মানসের মতে, “যদি নির্বাচিত হয়ে আসে, তাহলে আমাদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে। কারণ সনৎ খেলা অন্তপ্রাণ। নৈহাটির মানুষরা যদি ওর পাশে থেকে ওকে জিতিয়ে আনে, তা হলে আমার মনে হয় ভালই হবে আখেরে। ওই অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে।”

বনগাঁ ইস্টবেঙ্গল ফ্যানক্লাবের সদস্য সুমন্ত রায় ডিডব্লিউকে বলেন, “নৈহাটির যিনি প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন, তিনি ক্রীড়া জগতের একজন স্বনামধন্য মানুষ। তাই তিন প্রধান তাকে সমর্থন জানিয়েছেন। এখন যদি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় রাজনীতিতে নামেন তাহলে তিন প্রধান তো বটেই, সমগ্র ক্রীড়া জগত তাকে সমর্থন করবে। “

সুমন্ত মনে করেন, “ক্রীড়া জগতের মানুষরা এই প্রার্থীর কাছ থেকে কিছু না কিছু সাহায্য পেয়েছেন। তাই সমর্থন করছেন। তবে সমর্থন করছেন মানে যে, ভোটে দাঁড়িয়ে তার হয়ে লড়াই করছেন, তেমনটা নয়। যে কেউ কাউকে সমর্থন করতেই পারেন, রাজনীতির মাঠে দাঁড়িয়ে লড়াই তো করছেন না তার হয়ে।”

ফুটবল মাঠের কেউ কেউ বিষয়টিকে অন্যভাবেও দেখছেন। সাবেক ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “ফুটবল খেলাটা মাঠে হবে। সেখানে রাজনীতি ঢুকিয়ে দেওয়া উচিত নয়। ধীরেন দে জ্যোতিষ গুহের আমলে তা দেখা যায়নি।” একইরকম ভাবে ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যে কেউ ব্যক্তিগত মতামত দিতে পারেন। মনে হয় না, এরা ক্লাবের হয়ে বক্তব্য রেখেছেন। এটা ক্লাবের বক্তব্য হলে আমার আপত্তি আছে। ক্লাবে রাজনীতি ঢোকানো উচিত নয়।”

তবে বিজেপি বিষয়টাকে শুধু ময়দানের আবেগ বলে ছেড়ে দিতে রাজি নয়। নৈহাটির বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্র বিষয়টিকে নিয়ে গিয়েছেন আন্তর্জাতিক স্তরে। তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন ফিফা ও এশীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা এএফসির কাছে নালিশ ঠুকেছেন আইএফএ-র বিরুদ্ধে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন