আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষা ও ব্যাংক মালিকদের চাপ দুই কারণকে টাকা ছাপানোর নেপথ্যে। বলছেন সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য, একে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসাবে আখ্যা দিচ্ছেন অনেকে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে –এটি সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত, ব্যাংক মালিকদের চাপে পিছু হটা নয়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, টাকা ছাপানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতিকে ঘি ঢালা হলো। ফলে তৈরি করতে পারে রাজনৈতিক সমস্যা।
বেসরকারি খাতের ন্যাশলাল ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক তীব্র তারল্য সংকটে রয়েছে, তারা আমানতকারীদের চাহিদা মোতাবেক অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। সংকটে থাকা ব্যাংকের তালিকায়, ফারস্ট সিকিউরিটি ইসলামী, স্যোশাল ইসলামী, গ্লোবাল ব্যাংকও রয়েছে।
ব্যাংকগুলোর পূনর্গঠিত পর্ষদ আর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তৎপর ছিলো তারল্য সহায়তা পেতে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও নানা উপায়ে সহায়তা দেয়, তবে তাতেও পরিস্থিতি বদলানো যায়নি। তাই ব্যাংক মালিকদের একটি গোষ্ঠী, চাপ দিতে থাকেন, টাকা ছাপিয়ে সমস্যা কাটাতে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেবে, এমন যুক্তিতে অনঢ় ছিলো, টাকা না ছাপানোর। তবে ব্যাংক মালিকদের চাপে, শেষ পযন্ত পিছু হটেন। যদিও মুখপাত্র, চাপের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বলছেন, এ পদক্ষেপ, রাজনৈতিক নয়, কেবল অর্থনৈতিক।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাজারে টাকার সরবরাহ তারা বাড়তে দিবে না। তাই মুদ্রানীতি সংকোচন মূলকই থাকবে। একটি সময় পর, বাজার থেকে তারা তুলে নেবে বাড়তি তারল্য। তবে মূল্যস্ফীতি উস্কে গেলে, জন অসন্তোষ থেকে অন্তবর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়বে, তা বিবেচনায় থাকার কথা বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রথম ধাপে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা পেয়েছে ৬ দূর্বল ব্যাংক। যদিও, সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো আমানতকারীর সঙ্গে লেনদেন নিয়মিত করতে ৭০ হাজার কোটি টাকা চায়। অর্থনীতিবিদরা, ব্যাংকগুলোকে নিজেদের মতো স্বাস্থ্য ঠিক করতে হবে।
তারল্য সহায়তা থেকে পাওয়া অর্থ ফের তসরুপ করার সুযোগ তৈরি যাতে নায় হয়, তার দিকে মনোযোগের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশ্লেষকরা। একই সঙ্গে, এটি মূল্যস্ফীতে ঘি ঢালবে সেই সর্তকতা তাদের।
অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকট কাটাতে বিকল্পও হাতে নেই। টাকা না ছাপালো হয়তো মূল্যস্ফীতির ঝুকি কমে যেতে, কিন্তু অশান্ত হয়ে যেতে পারতেন আমানতকারীরা।