দেশ শাসনের সময় দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী ছিলেন শেখ হাসিনা আর তার ছেলে জয়। নানান খাতের লুটপাটে মা-ছেলের বোঝাপারাও ছিলো দেখার মতো। জয় মার্কিন নাগরিক। শেষমেশ হাসিনা পালিয়ে গেলেও আশ্রয় পাননি ছেলের দেশে। তাই দেখা হচ্ছে না দুজনার। তাই বলাই যায়, মন ভালো নাই হাসিনার। যে শেখ পরিবার এক সময় দেশের সর্বেসর্বা ছিলো আজ তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছেন দেশে-বিদেশে।
হাসিনার পতনের পর শুধু আওয়ামী লীগ সরকার নয়, হারিয়ে গেছে শেখ পরিবার। জানা গেছে, শেখ পরিবারের কয়েকজন সদস্যও ৫ আগস্টের আগেই দেশ ছাড়েন। রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই এখন আর দেশে নেই। ৫ আগস্টের আগে-পরে তারা দেশ ছেড়ে যান।
শেখ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিমের কোনো খোঁজ নেই। আরেক ভাই শেখ হেলাল সরকার পতনের আগেই দেশ ছাড়েন। তবে তার ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময় পালাতে পারেনি, দেশেই আত্মগোপনে। শেখ হেলালের ভাই শেখ সালাউদ্দীন জুয়েলকে সরকার পতনের পর টুঙ্গিপাড়ায় দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হিসেবে বরিশালের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলন শুরুর সময়ই তিনি ছোট ছেলেকে নিয়ে ভারতে চলে যান। তার আরেক ছেলে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ এবং আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ছোট ভাই সিটির বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ দেশেই আত্মগোপনে আছেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শেখ হাসিনার ফুপা আমির হোসেন আমুর অবস্থান কেউ বলতে পারছে না। শেখ সেলিমের ছোট ভাই শেখ ফজলুর রহমান মারুফ আগে থেকেই সিঙ্গাপুরে অবস্থান। বঙ্গবন্ধুর আত্মীয়ের মধ্যে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়া সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীও রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তিনি কি দেশেই আছেন না বিদেশে গেছেন কেউ বলতে পারছেন। তবে একাধিক সূত্রে বলছে, তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
লন্ডনে বসবাস করা শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ মন্ত্রী। শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক সরকার পতনের সময় দেশে ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু পরিবারের আরেক সদস্য ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সরকার পতনের দুই দিন আগে চলে যান সিঙ্গাপুর। তাপসের বড় ভাই শেখ ফজলে শামস পরশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে- এ নিয়ে সংগঠনের কারো কাছে তথ্য নেই।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দিল্লিতে কর্মরত। দেশ ছেড়ে হাসিনা ভারতের দিল্লীতে আশ্রয় নেন। হাসিনার বর্তমান অবস্থান নিয়ে বাতাসে নানা কথা ভাসলেও হাসিনা এখনো দিল্লীতেই আছেন এমনটাও শোনা যাচ্ছে। মেয়ে পুতুল কাছে থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ছেলে জয়ের সাথে দেখা নেই। আর এই শোকে হাসিনা চোখের জলে ভেছাচ্ছেন শাড়ির আচল।