রাতভর বৃষ্টিতে ও উজানের ঢলে নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কিছু এলাকার পানি কমেছে তবে তা খুবই ধীরগতিতে। এখনও তলিয়ে আছে পথ-ঘাট ও ঘরবাড়ি। জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে নোয়াখালীতে। এ জেলায় বন্যায় এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতভর বজ্রসহ ভারী বর্ষণে পানি আরও ছয় ইঞ্চি বেড়েছে। ফলে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এতে অধিকাংশ জায়গায় দেখা দিয়েছে ত্রাণের জন্য হাহাকার।
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবার দিনে বৃষ্টি হয়নি, কেবল রাতে হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেজন্য কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হচ্ছে।’
জানা গেছে, নোয়াখালীতে ১ হাজার ১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার মানুষ। এখনও ত্রাণ সহায়তার জন্য বিভিন্ন স্থানে হাহাকার করতে দেখা গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানা যায়, নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের পানিবন্দি মানুষের মধ্যে সরকারিভাবে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ৮৮২ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৫ লাখ টাকার পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা জেলা প্রশাসন কাজ করছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গম এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে সহায়তা আসছে। বিভিন্ন এলাকার মানুষ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবীরা নিরলসভাবে কাজ করছে। বৃষ্টি না হলে আমাদের বন্যা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হবে।’জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে খাদ্য সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ জেলায় বন্যায় এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’