যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সম্মেলনে ড. ইউনূস সাইডলাইন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিবর্গের সাথে। আছেন বিভিন্ন সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরাও। বিশ্বমঞ্চে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে। আরও দুইদিন তিনি এমন ব্যস্ত সময় পার করবেন। প্রশ্ন হচ্ছে এসব আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠনিক বৈঠকের মধ্য দিযে ড. ইউনূস তাঁর ক্ষমতা সুসংহত করার উপায় খুঁজছেন কি?
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর থেকেই অসম্ভব ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে দেশটিতে পা রেখেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক। কারণ জাতিসংঘ সম্মেলনের ফাঁকে এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশী কোন সরকার প্রধানের ক্ষেত্রে গত তিন দশকের মধ্যে এবারই প্রথম।
শুধু তাই নয়, জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টনি গুতেরেস, মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা ফলকার টার্ক, আইএমএফের প্রধান, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ পশ্চিমা নেতাদের অনেকেই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
এমনকি একদা বৈরি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরেীফের সঙ্গেও বেশ হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রভাবশালী প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে মুক্তমঞ্চে খুনশুটি করেছেন ইউনূস। ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে তিনি ভবিষ্যত বাংলাদেশের প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারীদের পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। এই পরিচয় পর্বে ছিলো মাহফুজ আলমসহ জুলাই বিপ্লবের সমন্বয়করা।
ড. ইউনূস এমনিতেই তাবৎ বিশ্বে সোশ্যাল বিজনেসের প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত মুখ। বিশেষ করে পশ্চিমাদের প্রিয়মুখ। কিন্তু এখন তিনি গণতন্ত্রের প্রয়োজনে বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
ইউনুস তাঁর প্রতিটি বৈঠক ও গুরুত্বপুর্ণ ব্যাক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎে জুলাই বিপ্লবের উপর বই ‘দ্যা আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ উপহার হিসেবে দিচ্ছেন। গ্রাফিতির এই বইটি শেখ হাসিনা সরকার নিয়ে জনগনের মনোভাব কিরকম, তা বুঝতে সহায়ক। এবং কীভাবে জুলাই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হয় সেটাও জানা যায়।
বৈঠকে অংশ নেয়া সব অংশীদাররাই নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সব ধরনের সংস্কারে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন। আসে আর্থিক সহযোগীতার অঙ্গীকার এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের মতো বিষয়গুলো।
বিশ্বনেতাদের সঙ্গে তাঁর এসব বৈঠকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাসছে। নানাজন নানা মন্তব্য করছেন। প্রশ্ন হচ্ছে এরমধ্যে দিয়ে ড. ইউনুস তাঁর ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার ইঙ্গিত দিচ্ছেন কি?
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এইগুলো যেকোন বৈঠকেরই অংশ। কিন্তু ড. ইউনুস স্বজ্জন হিসেবে পরিচিত হওয়ায় বেশি আলোচনা হচ্ছে। তবে এর মধ্য দিয়ে ঢাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও এক ধরনের বার্তা যাবে তা অস্বীকার করছেন না এই বিশ্লেইয়েরা।
ইতোমধ্যে এই সরকার সর্বোচ্চ আঠারো মাস ক্ষমতায় থাকতে পারেন বলে সেনাপ্রধান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন।
আব্দুল্লাহ শাফী, নাগরিক, ঢাকা।