রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ছয়টি হাতি উপহার দিয়েছেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) মস্কো সফরের সময় এই উপহার দেন তিনি। সম্প্রতি মিয়ানমার রাশিয়া থেকে ছয়টি যুদ্ধবিমান কিনেছে, আর এই হাতি উপহারকে রাশিয়া ও মিয়ানমারের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার একটি প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনেকেই একে “হাতি কূটনীতি” বলছেন।
মস্কোর ক্রেমলিনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার, বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং সামরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া, মিয়ানমারে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে একটি চুক্তিতেও সই হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু বিদ্যুৎ কোম্পানি রোসাটম মিয়ানমারে ১০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে এবং এটি পরিচালনার দায়িত্বও রোসাটমের হাতে থাকবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানিয়ে দিয়েছেন,
২০২৪ সালে রাশিয়া ও মিয়ানমারের বাণিজ্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পুতিন বলেন, “আপনার এই বন্ধুত্বপূর্ণ উপহারের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। হাতিগুলো ইতোমধ্যেই মস্কোর চিড়িয়াখানায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।” এছাড়া, তিনি মিয়ানমারের সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
মিয়ানমার ও রাশিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মস্কো প্রকাশ্যে জান্তা সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ হিসেবে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই উপহার রাশিয়া ও মিয়ানমারের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতার আরও এক প্রমাণ।
আগামী ৯ মে রাশিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে মস্কোতে একটি সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এই কুচকাওয়াজে অংশ নিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।
এই উপহারটি মিয়ানমার ও রাশিয়ার সম্পর্কের আরও এক শক্তিশালী অঙ্গীকার এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের কৌশলগত মিত্রতার প্রতীক। “হাতি কূটনীতি” মিয়ানমারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা এবং শক্তিশালী বন্ধন আরও দৃঢ় করবে।
পড়ুন : পুতিনের সঙ্গে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধানের দহরম-মহরম, উপহার দিলেন হাতি
দেখুন : “পুতিনকে হত্যার চেষ্টায় ক্রেমলিনে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা” |
ইম/