কিছু প্রিয় জিনিস দূর থেকেই সুন্দর, অনেকে এমন কথা বলেন। তবে মানেন না কেউই। প্রিয় কিছু দেখলেই কামড় বসাতে ইচ্ছে হয়!
“ওয়াও! কী কিউট! কী সুন্দর! আমার তো এটাকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে…”
আদুরে কোনোকিছু দেখলে কেন আমরা এধরণের কথা বলি? কেন আমরা ‘খেয়ে ফেলব’, ‘চেপে ধরব’ জাতীয় কথাগুলো বলতে থাকে। বিষয়টি একটু না, অনেক বেশিই অদ্ভুত!
আদুরে একটি কুকুর ছানা দেখলে কি আপনি তাকে চেপে ধরে কচলে ফেলবেন, বা খেয়ে ফেলবেন? না, কারণ তাহলে কুকুরটি মারা যাবে।
আমরা দুর্বল ভঙ্গুর আদুরে কোনো কিছুকে কখনোই এভাবে হত্যা করি না, তবু কেন আমরা এভাবে মনের ভাব প্রকাশ করি? আমরা কি আসলে সোশিওপ্যাথ?
আদুরে শিশু বা প্রানীর প্রতি আমাদের একরকম শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, আমরা এদেরকে চেপে ধরতে চাই, কচলে দিতে চাই। আসলে আমরা তাদেরকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে চাই।
এটি একটি প্রবৃত্তি, বিবর্তনের ধারায় পাওয়া একপ্রকার প্রতিক্রিয়া।
আদুরে শিশু বা প্রানীর ছবি দেখলেও আমাদের একই প্রতিক্রিয়া হয়, কিন্তু জড়িয়ে ধরার জন্য বা আদর করার জন্য শিশুটি বা প্রাণীটি আমাদের হাতের কাছে থাকে না বলে প্রতিক্রিয়াটি আমরা এভাবে প্রকাশ করে ফেলি।
এটা একধরণের আগ্রাসন। অক্ষতিকর, খেলার ছলে আগ্রাসন, কিন্তু আগ্রাসন।
একে হাই পজিটিভ ইফেক্টও বলা যায়, কারণ আপনি এভাবে আপনার আবেগ প্রকাশ করছেন এজন্য যে আপনি এতই উত্তেজিত যে আপনি বুঝতেই পারছেন না আপনার কী করা উচিত।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের মধ্যে এত বেশি ইতিবাচক আবেগ জমা হয় যে আমরা নেতিবাচক কিছু করে তা প্রশমিত করার চেষ্টা করি। যেমন সুসংবাদ পাওয়ার পর আমরা কাছের মানুষের গায়ে কিল-ঘুষি মারি, সারা বাড়ি দৌড়ে বেড়াই, লাফাই।
এভাবে আমরা আসলে এই তাৎক্ষণিক আবেগকে আপাতদৃষ্টিতে অর্থহীন শারীরিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিয়ে আনি।