26.8 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

ফিলিস্তিনিদের জাবালিয়া ছাড়তে ‘চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি’

গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের জন্য ইসরায়েলি বাহিনী ‘চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি’ দিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র আভিখাই আদরায়ে সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছেন, জাবালিয়া এলাকায় বসবাসকারী গাজার সব নাগরিককে দ্রুত এলাকার বাইরে চলে যেতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, যদি এই এলাকা দ্রুত খালি না করা হয়, তবে হামলা চালানো হবে। আদরায়ের এই সতর্কবার্তা প্রমাণিত করে যে, ইসরায়েল তার আক্রমণাত্মক অভিযান আরও তীব্র করতে পারে।

ইসরায়েলি বাহিনী এর আগে গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুন এলাকাতেও একই ধরনের চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিয়েছিল। গাজার জাবালিয়া এলাকা, যেখানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস করছেন, এখন বিপদের মধ্যে রয়েছে। এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য ইসরায়েল পরামর্শ দিয়েছে যে তারা দক্ষিণে অবস্থিত পরিচিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে চলে যান। তবে, জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থাগুলোর মতে, এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্থান সংকুলান সমস্যা রয়েছে এবং সেখানে অনেক বেশি লোকের উপস্থিতি, যা তাদের নিরাপত্তা ও মৌলিক জীবনযাত্রার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

ইসরায়েলের এই সতর্কবার্তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক সময়ের মন্তব্যের সঙ্গে মিল রয়েছে, যেখানে তিনি গাজাকে খালি করে ফিলিস্তিনিদের মিশর, জর্ডান ও অন্যান্য দেশে স্থানান্তরের কথা বলেছিলেন। যদিও এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল, তবুও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় তাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে, গাজায় চলমান সহিংসতায় অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছেন,

যাদের মধ্যে আল জাজিরা এবং প্যালেস্টাইন টুডে’র সাংবাদিকও রয়েছেন। চলমান বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৭০০ ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ৪০০ নারী ও শিশু রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলার পর ৫০,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১,১৩,৪০০ জনেরও বেশি।

এদিকে, মিসর গাজায় যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধারের জন্য একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। মিসরের প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং প্রথম সপ্তাহের পর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর করবে। যদিও এই প্রস্তাবটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে এটি পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারে।

ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলি বাহিনী তার সামরিক অভিযান চালিয়ে যেতে থাকলে গাজার পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ ছাড়া, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) মামলা চলমান রয়েছে।

গাজার এই সংকট আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মধ্যে তীব্র আলোচনা তৈরি করেছে এবং এর সমাধান খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং দেশগুলি নিজেদের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তবে, যতদিন না রাজনৈতিক সমঝোতা কিংবা শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়, ততদিন পর্যন্ত গাজার জনগণের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের উপর নির্বিচারে হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ

দেখুন: ফিলিস্তিনিদের লাখ লাখ ই/স/রা/ই/লি লুকিয়ে গেল | 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন