অস্থির এক সময়ে, নতুন গভর্নর পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার সামনে এখন অর্থনীতির গভীর ক্ষত সারানোর চ্যালেঞ্জ। দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকিং খাত, মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়ায় লাগাম টানাসহ কঠিন সব পথ পাড়ি দিতে হবে তাকে।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে বদলে যাচ্ছে সবকিছুই। সবাই আশায় বুক বেঁধেছেন, হয়তো এখন দূর হবে দীর্ঘদিনের জঞ্জাল।
বিশ্বজুড়েই অর্থনীতির কঠিন এক সময় এখন। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। সঙ্গে দুর্নীতি আর সুশাসনের অভাব, দেশের এই খাতকে করে তুলেছে বড্ড নাজুক। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সমস্যা অনেক গভীরে। যার সমাধানও রাতারাতি সম্ভব নয়।
এমন এক সংকটকালে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হয়ে এসেছেন অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর। গতকালই তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন এসেছে। সামনে চ্যালেঞ্জের পাহাড়। কীভাবে অর্থনীতির ক্ষত সারানোর পদক্ষেপ নেবেন তিনি?
শুরুতেই সামনে আসছে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকিং খাত। এই খাতের সংস্কারে নিতে হবে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত। চিহ্নিত করতে হবে অর্থনীতির সমস্যাগুলো। বের করতে হবে সমাধানের পথও।
বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। যার যাতাকালে বছরের পর বছর ধরে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। বাজারে গেলে, হাসিমুখে ফিরতে পারেন না কেউই। যে নিতপণ্যেই হাত দেয়া হয়, সেখানেই জ্বলে ওঠে চড়া দামের আগুন।
দ্রুত রাজস্ব খাতে সংস্কার আনা জরুরি। তবে, কর আদায় ও কর প্রশাসনে সংস্কার আনা জটিল এক প্রক্রিয়া। যেখানে পরিবর্তনের হাত দিতে হবে সাবধানতার সঙ্গে। কারণ, অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে, এ খাতে যথাযথ ব্যবস্থা না নিতে পারলে, সংকট বাড়ার শঙ্কা থাকে।
বেকারত্ব বিরাট এক সমস্যা দেশের অর্থনীতিতে। বিভিন্ন হিসাব বলছে, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অর্ধেকের বেশি হতে পারে। অর্থাৎ, তরুণ সমাজ কাজ না পেলে, তা হয়ে যায় বড় বোঝা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে, সেদিকেও নজর দিতে হবে গভর্নরকে।
ঋণ প্রবাহ অবাধ করাও বড় চ্যালেঞ্জ। গত বছরগুলোতে ঋণ পাওয়া নিয়ে, কঠিন বাস্তবতায় পড়তে হয়েছে তাদের। এবার নতুন পরিস্থিতিতে তাদের জন্য কী ব্যবস্থা নেবেন গভর্নর, সেটাও দেখার বিষয়।
এছাড়া আরও বেশকিছু বিষয় জড়িয়ে আছে অর্থনীতির সঙ্গে। স্থানীয় সরকার উজ্জীবিত করা, সরকারি সেবা হয়রানি ছাড়াই যথাসময়ে পাওয়া, ঘুষের লেনদেন বন্ধ করা গুরুত্বপর্ণ। স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন সেবামূলক খাতে কতটা স্বচ্ছতা আনা যায়, তার ওপরও অনেকটাই নির্ভর করছে অর্থনীতির চাকা কতোটা সজোরে ঘুরবে।