বাজেট ঘাটতি মেটাতে এবারও ঋণেই ভরসা করতে চান অর্থমন্ত্রী। ব্যয় মেটাতে সরকারের ব্যাংক নির্ভরতা নতুন বাজেটে আরও বাড়ছে। মোট বাজেটের এক তৃতীয়াংশই নয়া অর্থমন্ত্রী দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ধার করতে চান। ঋণের বেশির ভাগ অর্থই আসবে আবার দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে।
অর্থমন্ত্রীর কোষাগারের অর্থের বড় জোগানদাতা-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে, রাজস্ব সংস্থাটি আয় দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারে না অর্থমন্ত্রীকে। তাই তাকে ব্যয় করতে হয় ধার-দেনা করে।
বাজেট-ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছরে মোট ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। বিদেশ থেকে পাওয়ার লক্ষ্য ছিলো ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকার কিছু ওপরে, আর স্থানীয় উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটের ব্যয় মেটাতে সরকারের ঋণনির্ভরতা আরও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের মতো আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের জন্যও সরকার বিপুল পরিমাণ ঋণ করতে যাচ্ছে। এর এক-তৃতীয়াংশ অর্থই আসবে দেশি-বিদেশি ঋণ হিসেবে। ঋণের পরিমাণ হতে পারে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো।
বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো। বাকি ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে দেশি ঋণ। দেশি ঋণের মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে। বাকি ২০ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও অন্যান্য উৎস থেকে।
ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের দেশীয় ঋণের স্থিতি ছিল ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি ঋণের স্থিতি ৭ হাজার ৯৭৯ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলারকে ১১৭ টাকা ধরে হিসাব করলে তা ৯ লাখ ৩২ হাজার ৪০৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।
বাজেট তৈরির সময় সরকার ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় প্রতি অর্থবছরেই মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশের কিছুটা বেশি রাখে। এবারই এ লক্ষ্যমাত্রা ৫ শতাংশের নিচে রাখা হচ্ছে। তারপরও ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে, যা মেটাতেই বিপুল ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করছে সরকার।