ইসরায়েলের হামলার বসতভিটা হারিয়ে আশ্রয় শিবিরে গিয়েও নিরাপদ নেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মানুষ। সড়কপথে ইসরায়েলি বাহিনীর কড়াকড়িতে খাদ্যসহ জরুরী ত্রাণ সবাই পাচ্ছে না। এ অবস্থায় গাজার মানুষদের জন্য আকাশ থেকে বিমানে করে ত্রাণ সহায়তা পৌছে দেওয়ার কৌশল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ। প্রতিবেশী দেশ কাতার থেকে গাজার জন্য ৮০টির মতো বাক্স ভর্তি প্যারাসুটযুক্ত ত্রাণ সামগ্রী থাকছে মার্কিন বিমানে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে; গাজাবাসীদের খাবারের ব্যবস্থা করা এখন জটিল, ঝুঁকিপূর্ণ এবং বহুজাতীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ব্রিটিশ রয়্যাল ফোর্স-আরএএফ এর বিমান থেকে ২৬ মার্চ যুক্তরাজ্য গাজায় ১১ টন খাদ্য সহায়তা দিয়েছে । এর আগে ফেব্রুয়ারিতেও ব্রিটেন গাজায় ত্রাণ বিতরণ করে। যুক্তরাজ্যের দেওয়া এসব ত্রাণের মধ্যে রয়েছে পানি, চাল, রান্নার তেল, ময়দা,টিনজাত খাবার। গাজার মানুষের জন্য আকাশ থেকে ত্রাণ বিতরণ কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি, জর্ডান, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতও।
যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ১৮ বার আকাশপথে গাজার জন্য প্রায় ৪০ হাজার প্রস্তুত খাবার দিয়েছে। যদিও অন্যান্য ত্রাণ বিতরণ কর্মকাণ্ডের চেয়ে এ প্রক্রিয়া ব্যয়বহুল এবং কম কার্যকর এবং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। সম্প্রতি বিমান থেকে সাগরে পড়া ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে গাজায় ১২ জন পানিতে ডুবে যায় এবং পদদলিত হয় ৬ জন।
ত্রাণের মিশন পরিচালনাকারী মেজর বুন জানিয়েছেন, ‘‘ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে হতাহত যেন কম হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় আছে। কোন স্থানে খাদ্য দেওয়ার আগে আমরা সেই স্থানটি নিরাপদ করে নেই। তবে সাগরের ওপরে ত্রাণের বাক্সগুলো ছুঁড়ে দেওয়া হয় যেন এগুলো কোন বসতভিটার ওপরে গিয়ে না পড়ে।’’ বিমান আসার শব্দ এবং প্যারাসুট দেখে মানুষজন ত্রাণ দেওয়ার স্থানে দ্রুত জড়ো হয়ে যান। তবে, প্রয়োজনীয় ত্রাণ নিতে গিয়ে অনেককেই বেশি ঝুঁকি নিতে হয়। এ কারণে কেউ ত্রাণ পায়, কেউ পায় না। হতাহতের কারণে আকাশ থেকে ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করার আহবান জানিয়েছে গাজায় নিয়ন্ত্রক সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটি মনে করে, ক্ষুধার্ত মানুষদের ত্রাণ দেওয়ার এ প্রক্রিয়া বিপদজ্জনক এবং অকার্যকর।