‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চূড়ান্ত হয়েছে।
রোববার (১৬ মার্চ) ইউজিসিতে শিক্ষার্থীদের ৩২ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে, রাজধানীর নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিয়ে প্রতিনিধি দলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুটি মত দেয়া হয়। এর মধ্যে ১৭ জন ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির পক্ষে মত দেন। তবে, অন্য শিক্ষার্থীরা এই নামের পক্ষে সায় দেননি। তারা বলেন, ঢাকা কলেজের পূর্ব নাম ছিল ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ। তাই তারা ফেডারেল ইউনিভার্সিটি নামের পক্ষে মত দেন। পরে ইউজিসি তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বললে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দল নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির পক্ষে মত দেন।
২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয় রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ। এসব কলেজের মধ্যে রয়েছে—ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ, এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা অধীনে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। এসব আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে, সরকার গত বছরের অক্টোবর মাসে বিশেষ একটি কমিটি গঠন করে এবং সেই কমিটি দীর্ঘ পর্যালোচনার পর গত ডিসেম্বর মাসে গঠনের কাজ শুরু করে।

শিক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন, নতুন প্রতিষ্ঠিত হলে তা তাদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি করবে এবং আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ তৈরি হবে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আশা করছিলাম যে, সাত কলেজকে একীভূত করে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা হবে, যার মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে।”
এদিকে, ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া মীম বলেন, “নতুন নামটি এমন হতে হবে যা সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করছি, নতুন গঠনের মাধ্যমে শিক্ষার মান আরও উন্নত হবে এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আরও যুগোপযোগী হয়ে উঠবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রস্তাবিত নাম আহ্বান করে।
সেগুলোর মধ্যে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ বা ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরপর, ‘বাংলাদেশ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ বা ‘বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটি আলোচিত হচ্ছে। এ বিষয়ে ইউজিসি আগামী ১৫ মার্চ মতবিনিময় সভা আয়োজন করেছে, যেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করবেন।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের পর, শিক্ষার্থীরা আশা করছেন যে, এটি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তারা বলেন, সাত কলেজ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, এবং নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।
নামের ব্যাপারে আজ (১৬ মার্চ) ইউজিসি-তে চূড়ান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, শিক্ষক, এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি একসঙ্গে বসে নাম চূড়ান্ত করবেন। নতুন নামকরণ এবং প্রতিষ্ঠার পর তা দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে বলে শিক্ষার্থীরা আশাবাদী।
এদিকে, নতুন গঠনের বিষয়টি ইতোমধ্যে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, নতুনমাধ্যমে তাদের শিক্ষার সুযোগ আরও বাড়বে এবং তারা আধুনিক ও সৃজনশীল পরিবেশে শিক্ষালাভ করতে পারবেন। নতুন এইউচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করবে বলে তারা মনে করছেন।
পড়ুন: ব্রাজিলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ১২ য় শিক্ষার্থী নিহত
দেখুন: পরীক্ষার প্রশ্নে ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’
ইম/