অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও জনজীবন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার মতো কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
বুধবার (২৯ জানুয়ারী) ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫: সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা’ পূরণের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিপিডি।
স্বাগত বক্তব্যে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এখন পর্যন্ত অর্থনীতিতে তেমন কোনো চাঞ্চল্য দেখছি না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর অনেকগুলো খাতভিত্তিক সংস্কার কর্মসূচি নিয়েছে। অর্থনীতিকেন্দ্রিক কিছু সংস্কার আমরা লক্ষ্য করছি। তবে এখন পর্যন্ত জনগণের জীবনে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্যের অঙ্গনে স্বস্তি আনার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো স্টেকহোল্ডার লক্ষ্য করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তাৎক্ষণিক এবং মধ্যবর্তী প্রভাব বিবেচনা করে একটি ত্রিমুখী অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা উচিত। প্রথমেই সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, যাতে তারা অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে পুনরুদ্ধারে কিছুটা অবকাশ পায়। দ্বিতীয়ত, বছরের পর বছর ধরে পুঞ্জীভূত চ্যালেঞ্জগুলো একত্রে মোকাবিলা করা। তৃতীয়ত, সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলোকে শক্তিশালী করার জন্য সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ এবং তা টেকসই করা অর্থাৎ সংস্কার কর্মসূচিকে চলমান রাখা।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, অভ্যুত্থানের আর্থসামাজিক অবস্থার মধ্যে ধাক্কা রয়েছে। চলতি অর্থবছরে প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৭ শতাংশের বেশি। রাজস্ব আহরণের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী মাসগুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে ৪৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন।
রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া অর্থনৈতিক সংস্কার সম্ভব নয় বলে মনে করে সিপিডি। সংস্থাটি বলছে, ক্ষমতার পালাবদল হলেও অর্থনৈতিক গতিধারার উন্নতি নেই। অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি মাত্র তিন দশমিক সাত শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময় ছিল ১৭ ভাগের বেশি। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিপিডি বলছে, বিদেশি ঋণের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অভ্যন্তরীণ উৎসে নির্ভরতা বাড়ছে, যা আগামীতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এনএ/